/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/12/mamata-1-5.jpg)
নেতৃত্বের অন্দরে মতবিরোধ ছিল। বিতর্ক ছিল দক্ষিণ কলকাতার আধিপত্য নিয়ে । তৃণমূলের একাংশের অন্দরে দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ অবশেষে প্রকাশ্যে এল। প্রশ্নাতীত ভাবে রাজ্যের মন্ত্রিসভা এবং দলের উপর নিয়ন্ত্রণের ভরকেন্দ্র দক্ষিণ কলকাতা। এখানকার সব বিধায়করাই রাজ্যের মন্ত্রী। দলের শীর্ষ পদাধিকারীরাও প্রায় সবাই এই এলাকার বাসিন্দা। কাঁথির সভায় দক্ষিণ কলকাতার নেতৃত্ব নিয়েই বোমা ফাটিয়েছেন সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী। রাজনৈতিক মহলের মতে, জেলার নেতৃত্ব এমনকী উত্তর কলকাতার নেতৃত্বের মধ্যেও এ বিষয়ে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। তৃণমূল জমানায় তিন জন মেয়র হয়েছেন কলকাতা পুরসভার। সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম, প্রত্যেকেরই ঠিকানা দক্ষিণ কলকাতায়।
দক্ষিণ কলকাতা থেকে কারা রাজ্য মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন? সর্বাগ্রে ভবানীপুর থেকে নির্বাচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি তালিকা অনুয়ায়ী মুখ্যমন্ত্রী ৯টি দফতরের দায়িত্বে আছেন। এই এলাকায়ই বসবাস সুব্রত মুখোপাধ্যায়, জাভেদ আহমেদ খান, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস। এঁরা প্রত্যেকেই বিধায়ক ও রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। তৃণমূল কংগ্রেসের পদাধিকারীরাও অধিকাংশই দক্ষিণ কলকাতার।
* সরকারি তালিকা অনুযায়ী ৯টি দফতরের মন্ত্রীত্ব সামলাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অধীনে রয়েছে, স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক, তথ্য ও সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, সেচ ও জলপথ, ভূমি ও ভূমি রাজস্ব, উদ্বাস্তু পুনর্বাসন, সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা, পরিবহণ-সহ অন্যান্য দফতর।
* ফিরহাদ হাকিম। বন্দরের বিধায়ক। চেতলায় বাড়ি। ভবানীপুরের ভোটার। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী। একইসঙ্গে কলকাতা পুরসভার প্রশাসক। প্রাক্তন মেয়র।
* শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। রাসবিহারী কেন্দ্রের বিধায়ক। ভবানীপুরের ভোটার। বিদ্যুৎ দফতরের মন্ত্রী।
* সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বালিগঞ্জের বিধায়ক। এখন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন-সহ দুটি দফতরের মন্ত্রী।
* অরূপ বিশ্বাস। টালিগঞ্জ থেকে নির্বাচিত বিধায়ক। যুব ও ক্রীড়ার পাশাপাশি পূর্ত দফতরের মন্ত্রী।
* জাভেদ আহমেদ খান। কসবার বিধায়ক। বিপর্যয় মোকাবিলা এবং নাগরিক প্রতিরক্ষা দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন।
* পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নাকতলায় থাকেন। বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক। স্কুল শিক্ষা, উচ্চ শিক্ষা ও সংসদীয় বিষয়ক দফতরের মন্ত্রী।
* শোভন চট্টোপাধ্যায় যখন তৃণমূলে ছিলেন তখন একসঙ্গে তিনটে দফতর সামলেছেন। ছিলেন কলকাতার মেয়র।
* তাছাড়া একাধিক দফতর সামলানো মন্ত্রীরাও থাকেন এই দক্ষিণ কলকাতায়।
দক্ষিণ কলকাতার অধিপত্যের বিরুদ্ধে এতদিন ক্ষোভ পুষে রেখেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি যোগ দিয়ে নিজের এলাকায় প্রথম জনসভায় সেই ক্ষোভ উগরে দিলেন। শুভেন্দুর বক্তব্য, "গ্রামের ছেলে, পান্তা খাওয়া ছেলে। এখানে সকালে হাঁটতাম, সবাই দেখেছে। এই লড়াইটা তো গ্রাম-জেলার সঙ্গে দক্ষিণ কলকাতার চার-পাঁচটা লোকের। গোটা সরকারটা নিয়েছে এঁরা। ৬০টা দফতরের ৪০টা দফতর এঁদের কাছে। বলব আমি। এ-তো সবে শুরু।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন