মান অভিমানের পালা কাটিয়ে গেরুয়া শিবিরে পদ পেয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। কিন্তু দলে পদ পেলেও পূর্ব ঘোষিত দলীয় কর্মসূচিতে পথে নামলেন না শোভন-বৈশাখী। যদিও আলিপুর থেকে হেস্টিংস পর্যন্ত রোড শো-য়ে হাজির রয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়, এ রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং।
বিজেপির কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষক শোভন চট্টোপাধ্যায়ের প্রত্যাবর্তনের মিছিলে এমনিতেই বাইক ব়্যালির অনুমতি দেওয়া হয়নি। পুলিশ-বিজেপি বিস্তর টানাপোড়েনের পর লিখিত অনুমতি না পাওয়ায় হেঁটেই মিছিল শুরু করে পদ্ম বাহিনী। কিন্তু, এই ব়্যালির মুখ্য আকর্ষণ শোভন-বৈশাখী না আসায় অস্বস্তিত্বে গেরুয়া শিবির। এই দু'জনের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠছে বিজেপির অন্দরে।
কেন এলেন না শোভন-বৈশাখী? বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'দলীয় কর্মসূচিতে কেন এসেন না তা পরে জানতে চাওয়া হবে।' তাঁদের কি শোকজ করা হতে পারে? জবাবে দিলীপবাবু বলেন, 'সেই পথ খোলা আছে। প্রয়োজনে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।'
দেড় বছর আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রিয় কানন। একই সঙ্গে দিল্লিতে পদ্ম বাহিনীতে নাম লেখান বৈশাখীও। কিন্তু প্রথম থেকেই দলে নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। একাধিকবার তাঁদের মানভঞ্জনের চেষ্টা হলেও ব্যর্থ হয়েছেন গেরুয়া নেতৃত্ব। জারি থাকে শোভন ও তাঁর বান্ধবীর মান-অভিমানের পালা।
শেষ পর্যন্ত বিধানসভা ভোটের আগে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ও রাজ্যের মন্ত্রীকে বিজেপির কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষক করে বিজেপি। পদ দেওয়া হয় বৈশাখীকেও। তাঁদের প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করে রাখতেই এ দিন মিছিলের আয়োজন করে দল। জল্পনা ছড়ায় বেশ কয়েকজন তৃণমূল কাউন্সিলরও জোড়া-ফুল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন।
কিন্তু আয়োজন সম্পূর্ণ হলেও মিছিলে যোগ দিলেন না শোভন-বৈশাখী। সূত্রের খবর, সোমবার সকালেই বৈশাখী জানিয়েছেন তাঁকে আমন্ত্রণ করা হয়নি। পরে বেঁকে বসেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁকে বোঝাতে অবশ্য গোলপার্কে তাঁর বাড়িতে যান বেশ কয়েকজন রাজ্য বিজেপির যুব নেতা। যদিও কাজের কাজ হয়নি।
প্রবল উত্তেজনার মাঝে হয় বিজেপির রোড শো। মাঝপথে ওয়াটগঞ্জে বিজেপি নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে তৃণমূল কর্মীরা জুতো ছোঁড়ে বলে অভিযোগ। ফলে উত্তেজনা ছড়ায়। মুকুল রায় বলেন, 'বারে বারে স্পষ্ট হচ্ছে যে বাংলার কোথাও আইনের শাসন নেই।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন