শেষ পর্যন্ত গেরুয়া মিছিলে শোভন-বৈশাখী, দিদির বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ কাননের

শোভন চট্টোপাধ্যায়ও জানিয়ে দিলেন, 'বাংলার ক্ষতায় আর তৃণমূল ফিরবেন না।' তৃণমূলকে তোপ দেগে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্লোগান, ' শপথ নিয়েছি সদ্য, ঘরে ঘরে পদ্ম।'

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

রাজনৈতিক নিশ্ক্রিয়তা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত গেরুয়া মিছিলে শোভন-বৈশাখী। স্বস্তি ফিরলো পদ্ম বাহিনীর নেতাদের মুখে। উচ্ছ্বসিত বিজেপি কর্মীরা। দলের উৎসাহী কর্মীদের ভিড়ে ব়্যালি শেষে শোভন চট্টোপাধ্যায়ও জানিয়ে দিলেন, 'বাংলার ক্ষতায় আর তৃণমূল ফিরবেন না। যে বিজেপির হাত ধরে তৃণমূল তৈরি হয়েছিল সেই বিজেপির হাতেই তা ধ্বংস হবে।' তৃণমূল সুপ্রিমোকে নিশানা করে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্লোগান, ' শপথ নিয়েছি সদ্য, ঘরে ঘরে পদ্ম।'

Advertisment

বিজেপিতে যোগ দিয়ে বছর দেড়েকের টানাপোড়েন শেষে এদিনই প্রথম বিজেপির প্রকাশ্য সভায় দেখা যায় শোভন ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখীকে। বিকেল ৪টে নাগাদ গোলপার্ক থেকে মিছিল শুরু হয়। ঘন্টা দেড়েক পর তা শেষ হয় সেলিমপুরে। আগাগোড়াই হুড় খোলা গাড়িতে পাশাপাশি ছিলেন শোভন-বৈশাখী। তবে চর্চায় ইতি টেনে এদিন এই দু'জনের পোষাকের মিল দেখা যায়নি।

পদ্ম শিবিরের প্রথম সভাতেই তৃণমূল নেত্রীর প্রতি বাক্যবাণ শানান একদা তাঁরই প্রিয় কানন। বলেন, '২০১১ সালে যে চিন্তা নিয়ে আমরা সরকারতৈরি করেছিলাম, ২০১৬ সালে সরকারে ফিরেছিলাম, তার থেকে এখন তৃণমূল অনেক দূরে চলে গিয়েছে ।' শোভনের তোপ, 'মমতাদি বলছেন, সোনার বাংলা গড়েছেন। কিন্তু গরু পাচারের, কয়লা পাচারের সোনার বাংলা আমরা চাইনি।'

publive-image গেরুয়া রাজনীতিতে প্রাকাশ্যে আত্মপ্রকাশ শোভন-বৈশাখীর।

Advertisment

একই সঙ্গে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ও রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, 'দম বন্ধ হয়ে আসছে। জেনে রাখুন ওসব মন্ত্রিত্ব হাওয়াই চটির মতো ছুঁড়ে ফেলতে পারি। আবার লড়াইয়ের সময় এসেছে। বাংলায় আর তৃণমূল ফিরবে না। এবার ভোটে জিতবে বিজেপি।' তাঁর রাজনৈতিক অবস্থানের কারণেই বন্ধবী বৈশাখীর চাকরি নিয়ে তৃণমূল সরকার টানাটানি করেছে বলে দাবি শোভনের।

শোভনের তোপ, ‘২০১৮ সালে বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিনা নির্বাচনে একের পর এক জেল পরিষদ দখল করেছে তৃণমূল’।

মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এদিন মিথ্যাচারের অভিযোগ এনে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, 'আবাসনমন্ত্রী থাকাকালীন এক বছর গীতাঞ্জলি প্রকল্পে কোনও ঘর তৈরি হয়নি। এই নিয়ে বিধানসভায় প্রশ্ন করেন এক বিধায়ক। প্রশ্নের কী জবাব দেব তা জানানোর জন্য বিধানসভায় আমাকে ডেকে পাঠান মমতা। আমি গেলে বলেন বলতে, ২৫ লক্ষ ঘর তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। বিধানসভায় গিয়ে আমি সেকথা বলি। পিছন থেকে মহিলার কণ্ঠস্বর শুনতে পাই। দেখি উঠে দাঁড়িয়ে মমতাদি বলছেন, না ওটা ৪০ লক্ষ হবে। ১০ মিনিটের মধ্যে নিজের কথা বদলে ফেলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বাসযোগ্যতার কথা ভেবে সেদিন কোনও কথা বলিনি।'

ফিরহাদ হাকমিকেও কটাক্ষ করেন শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘মিনি পাকিস্তান বলে এমন বিপদে পড়েছেন যে মুছতে মুছতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে। বলতে হচ্ছে আমি পাকিস্তানের বিরোধী। ’

ব়্যালি শেষে শোভন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশান তোলেন। বলেন, 'দিদি সততার প্রতীক। তাঁর অনুপ্রেরণাতেই যাবতীয় কাজ হয়। এমনকী দুষ্টু ভাইয়েরা মেয়েদের সম্মান নিয়েও ছিনিমিনি খেলেন। এই অনুপ্রেরণা আর চলতে দেওয়া যায় না। ক্ষমতার অপব্যবহারের এবার শেষের সময় এসেছে।'

তৃণমূলে পরিবারতন্ত্র নিয়েও এদিন সরব হয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট যে তাঁদের নিশানায় যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

মান-অভিমানের পালা সাঙ্গ করে শেষ পর্যন্ত সক্রিয় গেরুয়া রাজনীতির বৃত্তে শোভন-বৈশাখী। ইভিএমে তাঁদের এই সক্রিয়তা জোড়া-ফুলকে কতটা বেগ দেয় এখন সেদিকেই নজর।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

bjp Mamata Banerjee Sovan Chatterjee Baishakhi Banerjee