‘কানন কেমন আছে, ওষুধ ঠিকমতো খাচ্ছে তো?’ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সম্পর্কে খোঁজ নিলেন ‘উদ্বিগ্ন’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে যাতে ‘কানন’ সাবধানে থাকেন, সে বার্তাও বৈশাখীকে দিয়েছেন মমতা। নবান্নে তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে প্রায় ১ ঘণ্টার বৈঠক শেষে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে এমনটাই জানালেন শোভন-বান্ধবী তথা অধ্যাপিকা তথা বিজেপির সদস্য বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
নবান্নে মমতা-বৈশাখী বৈঠকে কী কথা হল?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘শোভনের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন। বরাবরই শোভনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত থাকেন দিদি। শোভন কেমন আছে এখন? ওষুধ ঠিকমতো খাচ্ছে কিনা, ওর শরীর ঠিক আছে কিনা এনিয়ে খোঁজ নিয়েছেন। তাছাড়া এখন করোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছে চারদিকে, এই পরিস্থিতিতে যাতে শোভন সাবধানে থাকেন, সে পরামর্শ দিয়েছেন দিদি’’।
আরও পড়ুন: শোভন চাইলে আমি হাসিমুখে সরে যাব: রত্না
দিদি-ভাইয়ের মান-অভিমান পর্ব কি তবে শেষ হল? জবাবে বৈশাখী বলেন, ‘‘অভিমান নেই বলেই তো ভাইফোঁটায় গিয়েছিলাম’’।
পুরভোটের মুখে শোভন চট্টোপাধ্যায় কোন দলে সক্রিয়ভাবে ফিরবেন, এই জল্পনায় যখন সরগরম বঙ্গ রাজনীতি, তখন নবান্নে মমতা-বৈশাখী বৈঠক রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে কোনও কথা হয়নি বলে দাবি করেছেন বৈশাখী। পাশাপাশি তাঁর আরও দাবি, ‘‘নবান্নে যাওয়ার সঙ্গে শোভনের তৃণমূলে ফেরার কোনও সম্পর্ক নেই। আমি আমার কলেজের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম। দিদি আশ্বস্ত করেছেন বিষয়টি দেখবেন’’।
আরও পড়ুন: নবান্নে মমতার কাছে বৈশাখী! তৃণমূলেই কানন?
উল্লেখ্য, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই পদ্মশিবিরের সঙ্গে মনোমালিন্য হয় শোভন-বৈশাখীর। এরপরই ভাইফোঁটায় মমতার কালীঘাটের বাড়িতে যান এই যুগল। সেবারও শোভনের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তৃণমূলনেত্রী। সেসময় শোভনকে মমতা জিজ্ঞেস করেছিলেন, কেন আর শোভন হাঁটতে যান না। উত্তরে ‘দিদি’-কে ‘কানন’ বলেছিলেন, ‘‘নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি’’। এর কিছুদিন বাদেই শোভনের নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিয়েছিল মমতা সরকার। এর আগে, বিজেপিতে যোগদানের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে শোভন বলেছিলেন, ‘‘উনিই (মমতা) তো অভিভাবক ছিলেন। আমি তো ওঁকে তৈরির জন্য সব নষ্ট করে আমার জীবন দিয়েছিলাম। কিন্তু, জিজ্ঞাসা করার মানসিকতা না দেখিয়ে পরিবার নিয়ে যে রাজনীতি করেছেন, তার শালীনতা কি উনি বিচার করবেন? ওঁর কাছ থেকে পরবর্তীকালে অভিভাবকের আচরণ পাইনি। ওঁর শোনার মতো মানসিকতা ছিল না’’।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন