‘দিদি’র হাত থেকে ভাইফোঁটা নেওয়ার ক’দিনের মধ্যেই কাননকে (কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিক শোভন চট্টোপাধ্যায়কে এ নামেই ডাকেন তৃণমূল সুপ্রিমো) নিরাপত্তা বলয় ফিরিয়ে দিয়েছে মমতা সরকার। চতুর্দিকে জল্পনা, ভাইফোঁটা নিতে যাওয়ার মধ্যে দিয়েই শোভনবাবু ঘরে ফেরার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন। আর এরপরেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা ফেরানো নিয়ে চরম বিদ্রুপ করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন দিলীপের তীর্যক মন্তব্য, ‘‘বিজেপিতে থাকলে ভয় নেই, তাই নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছিল। তৃণমূলে যাবেন বলে হয়তো নিরাপত্তা দেওয়া হল। তৃণমূলে হয়তো ওঁর (শোভন) প্রাণের আশঙ্কা রয়েছে’’। তবে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে ফেরার জল্পনা নিয়ে এখনও তাঁর সঙ্গে কোনও কথা হয়নি বলেও এদিন দাবি করেছেন মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ।
আরও পড়ুন: ‘আমার ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে’, পেগাসাস হানার মধ্যেই বিস্ফোরক মমতা
ঠিক কী বলেছেন দিলীপ ঘোষ?
শনিবার শোভনের নিরাপত্তা ফিরে পাওয়ার বিষয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘আমিও শুনেছি যে ওঁর (শোভন) নিরাপত্তা ফেরানো হয়েছে। জানি না কেন সরানো হয়েছিল। আবার এটাও জানি না যে কেন ফেরত দেওয়া হল। তৃণমূল মনে হয় বিশ্বাস করে যে বিজেপিতে থাকলে আক্রমণের ভয় নেই, ঝামেলা নেই। তাই হয়তো নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছিল। তৃণমূলে গেলে বা তৃণমূলের কাছাকাছি থাকলে হয়তো ওঁর (শোভন) জীবনের আশঙ্কা রয়েছে। তাই নিরাপত্তা দিয়েছে’’। এ প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি আরও বলেন, ‘‘যাঁরা (যেসব তৃণমূল বিধায়ক-সাংসদ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন) তৃণমূল ছেড়ে এসেছেন, তাঁদেরই নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে। কারণ, বিজেপিতে কোনও ভয় নেই। তৃণমূলে আসলে কেউ হয়তো সুরক্ষিত নন, তাই এরকম করা হচ্ছে’’।
আরও পড়ুন: শোভন মমতার কাছে ফেরায় মুখ খুললেন রত্না
উল্লখ্য, ভাইফোঁটায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যাওয়ার ক’দিনের মধ্যেই শোভনের ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। বিজেপিতে যোগদানের পরই কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের নিরাপত্তা তুলে নিয়েছিল রাজ্য সরকার। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে সে সময় সরব হতে দেখা গিয়েছিল শোভনকে। তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতিকে চিঠি লিখে নিরাপত্তাহীনতার কথাও জানিয়েছিলেন। এরপর শোভন-বৈশাখী-বিজেপি এই ত্রিভুজের আকৃতি বদলেছে। শেষ পর্যন্ত মুখে সামাজিক অনুষ্ঠানের তত্ত্ব আওড়ে ফের মমতার কাছেই গিয়েছেন তাঁর ‘প্রিয় কানন’। এই প্রেক্ষাপটে শোভনের নিরাপত্তা ফেরানোর সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে শোভনের তৃণমূলে ফেরার জল্পনার পালে হাওয়া লাগল বলেই মনে করা হচ্ছে।