জোড়া-ফুল ছেড়ে দেড় বছর আগেই পদ্ম পতাকা ধরেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু নতুন দলের সঙ্গে শোভন-বৈশাখীর টানাপোড়েন কম হয়নি। পদ পেয়ে পথে নামার ঘোষণা করেও গত সোমবার মিছিল এড়িয়েছিলেন এই দুই গেরুয়া নেতা-নেত্রী। চরম বিড়ম্বনায় পড়েছিল গেরুয়া শিবির। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জট কাটার ইঙ্গিত মিললো রবিবার। দলের হেস্টিংস কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠক করলেন শোভন-বৈশাখী। কিছুটা হলেও স্বস্তির ছাপ বিজেপির বঙ্গ নেতৃত্বের চোখে-মুখে। এরপর আজ দলের গোলপার্ক থেকে সেলিমপুর পর্যন্ত মিছিলে শোভেন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি প্রায় প্রায় নিশ্চিত বলেই মনে করছে গেরুয়া নেতৃত্ব।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এদিনই প্রথমবার সংগঠনের কোনও বৈঠকে হাজির হলেন শোভন-বৈশাখী। সোমবার মিছিলে তাঁরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন। এদিনের মিছিল প্রসঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, 'দক্ষিণ কলকাতা সাংগঠনিক জেলার তরফে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেখানে আমি এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় হাজির থাকব।' দলের কর্মী হিসাবে মিছিলে যোগ দেওয়ার কথা বলেছেন বৈশাখীও।
যদিও গত সোমবারের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার মিছিল থেকে নিজেদের দূরত্বে রেখেছেন দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতারা। পরিস্থিতি যেন অনেকটা- না আঁচালে বিশ্বাস নেই। ড্যামেজ কন্ট্রোলে অবশ্য পদ্ম বাহিনীর প্রস্তুতি সাড়া। পুলিশি অমুমতি না মিললেও এদিনই বস্তি উন্নয়ন কমিটির ব্যানারে রাকেশ সিংয়ের নেতৃত্বে আরেকটি মিছিলের ডাক দিয়ে রেখেছে বিজেপি। আসলে গত সোমবার বিজেপি নেতাদের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন শোভন-বৈশাখী। এবার পাল্টা চ্যালেঞ্জ হিসাবে এদিনের জমায়েতকে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের শক্তি যাচাইয়ের মঞ্চ হিসাবেই দেখছে গেরুয়া নেতৃত্ব।
৪ঠা ডিসেম্বর অরফানগঞ্জ রোড থেকে প্রদেশ কার্যালয় মুরলীধর সেন লেন পর্যন্ত বিজেপির মিছিল হওয়ার কথা ছিল। আদতে যা শোভন-বৈশাখীকে স্বাগত জানানোর উদ্যোগ ছিল। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে ওই দিন মিছিলে তাঁরা যোগ দেননি। পরে শরীর খারপের কথা বলেন রাজ্য বিজেপির সহপর্যবেক্ষক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সূ্ত্রের খবর অবশ্য, নেতৃত্বের ব্যবহারে অসম্মানিত বোধ করায় মিছিলে যোগ দেননি তাঁরা।
এরপর শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে আলোচনা করতে দেখা গিয়েছে বিজেপির দুই রাজ্য যুব নেতা দেবজিৎ সরকার, শঙ্কুদেব পাণ্ডাকে। তাতেই মুখ্যমন্ত্রী প্রিয় কানন বও তাঁর বান্ধবীর মান ভঞ্জন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। রবিবার তাঁরা যোগ দিয়েছেন বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকে। এখন দেখার শোভন-বৈশাখী গেরুয়া শিবিরের আজকের মিছিলে উপস্থিত থাকেন কিনা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন