বিহার ভোটে শোচনীয় ফলাফলের পর পরই কংগ্রেস নেতৃত্বকে আক্রমণ করেছিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী কপিল সিব্বল। পরাজয় কংগ্রেসের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে বলে দাবি করে দলের পরিকাঠামো বদলের দাবি তুলেছেন তিনি। এরপরই একঝাঁক কংগ্রেস নেতৃত্বে দলের এই আইনজীবী নেতার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। এবার সেই তালিকায় যোগ হলেন লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। সিব্বলকে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য়, 'কোনও কিছু না করেই আত্মবিশ্লেষণের কথা বলার কোনও মূল্য নেই।'
দলের শীর্ষ এক নেতার মুখে এই কটাক্ষ প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেছেন, 'এর আগেও কপিল সিব্বল এই ধরণের কথা বলেছেন। উনি কংগ্রেসকে সম্পর্কে খুবই উদ্বিগ্ন বলে মনে হয়েছে। আত্মবিশ্লেষণ চাইছেন তিনি। কিন্তু, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ কিংবা গুজরাটের ভোটে ওঁর মুখটা কেউ দেখতে পায়নি।'
অতিরিক্ত কথা বললেই যে কাজের কাজ হয় না তা এদিন স্পষ্ট্র করে দিয়েছেন অধীর। সিব্বলকে তোপ দেগে লোকসভার কংগ্রেস নেতার কথায়, 'উনি যা বলছেন তা ঠিক কিনা, তা প্রমাণ হয়ে যেত যদি কপিল সিব্বলজি বিহার ও মধ্যপ্রদেশে যেতেন। কিন্তু কেবল মুখের কথায় কিছুই হয় না। কাজের কাজ কিছু না করে এই আত্মবিশ্লেষণের কোনও মূল্য নেই।'
পরপর নির্বাচনে খারাপ প্রদর্শনের পর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে কপিল সিব্বল বলেছিলেন, 'সমস্যা বোঝার চেষ্টা করছে না শীর্ষ নেতৃত্ব। মানুষ কংগ্রেসকে বিকল্প হিসাবে গ্রহণ করছে না, এই সত্যটা উপলব্ধি করার সময় এসেছে। দলের হতশ্রী দশা কারও চোখে পড়ছে না। আমরা দেখতেই চাইছি না। আমাদের কাজ হল দলকে পুনরুজ্জীবিত করা। এবং আমরা যদি সামনে এসে এই সত্যিটা স্বীকার না করি তাহলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।'
এর আগে কপিল সিব্বলের বিরুদ্ধে অশোক গেহলট টুইটে জানিয়েছিলেন, 'দলের অভ্যন্তরীণ ইস্যুকে মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করার কোনও মানে হয় না। গোটা দেশের দলীয় কর্মীদের আবেগকে আঘাত করা হয়েছে। ১৯৬৯, ১৯৭৭, ১৯৮৯ এবং পরে ১৯৯৬ সালেও কংগ্রেসে ডামাডোল তৈরি হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যেকবার শক্তিশালী হয়ে সমস্যা ঝেড়ে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে দল। দলীয় নেতৃত্ব, আদর্শ এবং কর্মসূচির উপর বিশ্বাস রাখি আমরা।'
তবে, কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ও দলের আইনজীবী সেলের প্রধান তঙ্খা সিব্বলকে সমর্থন করেছেন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেছেন, 'কংগ্রেস দল ধসে পড়ছে এটা আংমরা দেখতে চাই না এবং বসে বসে তা দেখতেও পারব না। অন্যরা কেউ কিছু কেন বলছেন না সেটা তাঁদের নিজস্ব বিষয়। আমার বা সিব্বলের সেই ধরণের কোনও বাধ্যবাধকথা নেই। আমরা কংগ্রেসের অস্তিত্ব রক্ষার ইস্যুতে প্রশ্ন তুলেছি। আমাদের মতো মানুষরা এগিয়ে না এলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন