প্রশ্ন ছিল, সিপিএমের সঙ্গে কি জোট হতে পারে? বিজেপি, তৃণমূল ও সিপিএম- শত্রু হিসাবে কে কেমন? জবাবে সিপিএম শত্রু তালিকায় তিন নম্বরে রাখলেও জোটের জন্য আলোচনা হতে পারে জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। কিন্তু, কেন্দ্রে রাহুলের নেতৃত্বে সরকার গঠন হলে এবং তৃণমূল সেই সরকারে সমর্থন জানালে প্রদেশ কংগ্রেসের ভূমিকা কী হবে? বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করা সোমেন জানিয়ে দিলেন, এমন ঘটনা ঘটলে, তাও মেনে নিতে হবে রাজ্য় কংগ্রেস নেতৃত্বকে। বুধবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সোমেন মিত্রের 'মিট দ্য প্রেস' অনুষ্ঠানের নির্যাস এটাই।
এরাজ্যে দীর্ঘকাল সিপিএম যখন ক্ষমতায়, তখন কংগ্রেস ছিল বিরোধী দল। এরপর ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও বামেরা জোট করেছে। পরবর্তীতে উপনির্বাচনেও প্রার্থী না দিয়ে পরোক্ষে একে অপরকে সমর্থন জানিয়েছিল বাম-কংগ্রেস। কিন্তু এবারের লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে পৃথক ভাবে লড়ছে দু'পক্ষই। তবু ভবিষ্যতে সিপিএমের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা খোলা রাখতে চাইছে রাজ্য কংগ্রেস। তবে হাত ধরাধরির রাস্তায় হাঁটার পরও সিপিএম যে এখনও কংগ্রেসের শত্রু তালিকায় রয়েছে তা এদিন মিট দ্য প্রেস-এ স্পষ্ট করে দিলেন মধ্য কলকাতার 'ছোড়দা'।
আরও পড়ুন- অবসরের পর কী করবেন? নিজমুখে জানালেন মোদী
এদিন এক প্রশ্নের জবাবে সোমেন মিত্র জানান, "কংগ্রেসের প্রথম শত্রু বিজেপি, দ্বিতীয় তৃণমূল কংগ্রেস"। অথচ এই তৃণমূলের সঙ্গে জোট করেই ২০১১ সালে পরিবর্তনের সরকারে শামিল হয়েছিল কংগ্রেস। এরপর সিপিএমের সঙ্গে জোট করলেও এই কমিউনিস্ট পার্টিটি যে এখনও কংগ্রেসের শত্রু তালিকায় রয়েছে তাও জানান সোমেন। তবে, শত্রুর তালিকায় তৃণমূলের পরে সিপিএমের আবস্থান।
নরেন্দ্র মোদী এদিন অভিনেতা অক্ষয় কুমারকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "দিদি নিয়ম করে প্রতিবছর কুর্তা ও মিষ্টি পাঠান"। এই প্রসঙ্গে সোমেন মিত্র বলেন, "মোদী এবং দিদির মধ্য়ে ভালবাসা ও শ্রদ্ধার সম্পর্ক আছে। গুজরাটে দাঙ্গার পর মোদীকে লাল গোলাপ উপহার দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। এমনকী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মোদীকে প্রথম ফুল পাঠিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী"।
রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সরাসরি লড়াই হচ্ছে লোকসভা নির্বাচনে। তৃণমূল নেত্রীর দাবি, ৪২-এ ৪২ পাবে তাঁর দল। তাহলে বিজেপিকে ঠেকাতে কেন্দ্রে সরকার গড়তে তৃণমূলের প্রয়োজন পড়লে তখন কী হবে? সোজাসাপটা জবাব সোমেনের। "তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করলে রাজ্য কংগ্রেস তা মেনে নেবে"।
আরও পড়ুন- বাংলায় সুষ্ঠু ভোট করতে মরিয়া কমিশন, চতুর্থ দফায় ৯৮% বুথে বাহিনী
সংখ্যালঘু প্রশ্নে এদিন মমতা সরকারকে আক্রমণ করেছেন সোমেন মিত্র। সোমেনের অভিযোগ, সংখ্যালঘুদের নিয়ে ভাবছে না রাজ্য। তাঁর দাবি, "কংগ্রেস সাচার কমিশন গঠন করেছিল। সংখ্যালঘুদের বাস্তব চিত্র জানা গিয়েছিল সাচার কমিশনের রিপোর্টে। সাত্তার সাহেব, জয়নাল আবেদিনের মত অনেক মন্ত্রী ছিলেন কংগ্রেস সরকারে। আর এখন সংখ্য়ালঘু মন্ত্রী তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর প্রতিমন্ত্রী গিয়াস-উদ্দিন মোল্লাকে বলেছেন ঘুরে বেড়াতে। তার কোনও কাজ নেই"।