রাজ্য়ে হিংসার সীমা-পরিসীমা নেই বলে সুর চড়ালেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পরিসংখ্যান দিয়ে দলের কার্যকরি কমিটির সভায় সাংসদ দাবি করেন, "কাশ্মীরেও কখনও এত হিংসা হয়নি।" এদিকে গতকাল, সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, দু-একটা ঘটনাকে নিয়ে অযথা বাড়িয়ে বলা হচ্ছে।
এই মুহূর্তে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যের নানা এলাকা পরিদর্শন করছেন। ওই সব জায়গা থেকে হিংসার অভিযোগ এসেছে। এছাড়া এসটি কমিশনও বিভিন্ন জায়গার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে। নির্বাচনের পর থেকেই হিংসা নিয়ে অভিযোগ করে আসছে বিজেপি। মেদিনীপুরের সাংসদের দাবি, "বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে ১৭১ জন খুন হয়েছে। নির্বাচনের পর থেকে আজ পর্যন্ত ৪১ জন দলের কর্মীকে খুন করা হয়েছে।"
কার্যকরি কমিটির বৈঠকে ভাষণ দিতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দাবি করেছেন, রাজ্যের সাম্প্রতিক হিংসার চিত্র কাশ্মীরকেও হার মানিয়েছে। দিলীপ ঘোষ বলেন, "নির্বাচনের পর থেকে রাজ্য়ে খুন, লুটপাঠ, ঘর-বাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে। এখনও অনেকেই বাড়িতে ঢুকতে পারেননি। ভারতের কোনও রাজ্য়ে এমন হিংসা হয়নি। যে কাশ্মীর ৪০ বছর ধরে হিংসায় জ্বলছিল সেখানেও এমন হিংসা দেখা যায়নি। হিংসার কোনও সীমা-পরিসীমা নেই।"
আরও পড়ুন, তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদল, নজির গড়ার পথে দুই মন্ত্রী
এদিন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "নির্বাচনের পর ৮০ হাজার মানুষ ঘর-বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তাঁদের অনেকে বাড়ি ফিরেছেন। কয়েক হাজার মানুষ এখনও বাড়ির বাইরে আছেন। ১১ হাজারের কাছাকাছি হিংসার ঘটনা আমাদের কাছে নথিভুক্ত হয়েছে। ৩০০-র বেশি শিবিরে থাকা ও খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। ৩১ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত, ৩২৩৯ টা ঘটনার বিবরণ আমাদের আইনজীবীদের দেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, "পুলিশ-প্রশাসন কোনও সহযোগিতা করছে না। আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি, বিভিন্ন কমিশনে জানিয়েছি। রাজ্যপালের কাছেও গিয়েছিলাম সুরাহা চেয়ে। তিনি পথে নামায় তাঁকে অপমানিত হতে হচ্ছে।"
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের হিংসার কথা তুলে ধরেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার একেবারে কাশ্মীরের হিংসার তুলনা টানা হল। তবে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে তেমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। দু-একটা ঘটনাকে বড় করে দেখানো হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন