দেড় মাস পেরিয়ে গিয়েছে। কলেজগুলোতে ভর্তি নিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচিও আর নেই। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভানেত্রী হিসাবেই রাজ্য়ের সর্বত্র ২৮ অগাস্ট মেয়ো রোডের সভার প্রস্তুতি সভা করছেন জয়া দত্ত। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন প্রচারের জন্য়। ২৮ অগাস্ট মেয়ো রােডে গান্ধি মূর্তির পাদদেশে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে বক্তব্য় রাখবেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। প্রশ্ন উঠেছে প্রতিষ্ঠা দিবসের আগে তাঁকে না সরিয়ে, প্রস্তুতি পর্বে তাঁর মেহনত কাজে লাগিয়ে ২৮ অগাস্টের পর কি তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে?
এবার রাজ্য়ে কলেজগুলোতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি নিয়ে বিস্তর তোলাবাজির অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। জেলাগুলোতে শুধু নয়, মহানগরের কলেজগুলোতেও ভর্তি নিয়ে দরাদরি চলতে থাকে। অভিযোগ ওঠে, ভর্তি তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও টাকা দিতে বাধ্য় করা হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের। তাছাড়া যাঁরা টাকা দিতে পারেনি তাঁরা ভর্তিও হতে পারেনি। তাঁদেরকে কলেজ থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এই আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে অধিকাংশ কলেজের ছাত্র নেতৃত্ব। এমনকী যেসব ছাত্রনেতা গ্রেপ্তার হয় তাদের সঙ্গে দলের রাজ্য় সভানেত্রীর ছবিও প্রকাশ পায়। বিতর্ক তাড়া করতে শুরু করে সংগঠনের সভাপতি জয়া দত্তকে। ঘনিষ্ঠমহলে দলের সুপ্রিমো জানিয়ে দেন, সরানো হবে জয়া দত্তকে। কিন্তু জুলাই মাস পার হয়ে গেলেও সরানো হয়নি জয়াকে।
২৮ অগাস্ট টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হবে মেয়ো রোডে। তারই প্রস্তুতিতে একটি সভা হয়েছিল তৃণমূল ভবনে। সেখানে অন্য় ছাত্র নেতৃত্বের সঙ্গে হাজির ছিলেন জয়াও। তবে সূত্রের খবর, ওই সভায় দলের শীর্ষ নেতারা জানিয়ে দেন, আপাতত কাজ চলুক, ২৮ অগাস্টের পর নেতৃত্ব পরিবর্তন করা হবে। তারপর রাজ্য়ের সমস্ত জেলায় প্রস্তুতি সভাগুলোতে নেত্রী হিসাবে হাজির ছিলেন জয়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলা সভাপতি বলেন, “যখন জয়া আসবে বলে জানায়, তখন আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে ফোন করে বিষয়টা জানতে চেয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, জয়াই যাবে। ওর নেতৃত্বেই সভা করতে হবে।’’ জয়া দত্ত এখন কলকাতাসহ রাজ্য়ের সর্বত্র প্রচারে অংশ নিচ্ছেন।
শুক্রবার এ বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জয়া দত্ত ফোনে বলেন তিনি মিটিং-এ ব্য়স্ত রয়েছেন।
জয়ার ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, কলেজগুলোতে যখন তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছিল তখন দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছিল জয়া সভাপতি হলেও সমস্ত কলেজে চলা দুর্নীতির জন্য ক্ষেত্রেই কি একমাত্র তাঁকেই দায়ী করা উচিত? কলকাতাসহ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় কলেজগুলো স্থানীয় নেতা বা স্থানীয় ছাত্রনেতার কর্তৃত্ব চলে। এ ব্যাপারে টিএমসিপি জেলা সভানেত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন দলেরই শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ। যেহেতু তাঁর ওপর খাপ্পা হয়েছেন দলের সুপ্রিমো, তাই কেউ আর এ নিয়ে প্রকাশ্য়ে মন্তব্য় করতে চাইছেন না। এখন দেখার বিষয় ২৮ অগাস্টের পর ওই পদে নতুন কেউ আসেন কি না।