দাসপুর জনসভায় আজ বক্তব্য রাখলেন তৃণমূল (TMC) নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। সেখানে তিনি বলেন, "সাগর থেকে পাহাড় জনগণের একটাই রায়, বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়। বিজেপির সভায় লোক হচ্ছে না। ডাবল ইঞ্জিন সরকার মানে বিজেপির আরও চুরি। অনাহারে মৃত্যুর খবর রাখেন না মোদি।"
এদিন তিনি বলেন, ‘গরমের সময় মানুষ যখন সভায় আসে তখন তারা সঙ্কল্প নিয়েই আসে। সাগর থেকে পাহাড়, জনগণের একটাই রায়। মানুষ নিজের মেয়েকেই চায়। এটা জনগণ বলছে, কেউ কিছু বলতে পারবে না।‘ বিজেপির সভায় লোক হচ্ছে না। ওরা রয়েছে হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুকে। আর আমরা আছি মাঠে, ঘাটে, ময়দানে। সোশাল মিডিয়া বন্ধ থাকলে প্রধানমন্ত্রী ট্যুইট করেন। আর দলিত নির্যাতন, কৃষক আন্দোলন, অনাহারে মৃত্যুর খবরে প্রধানমন্ত্রী ট্যুইট করতে পারেন না। এভাবেও কটাক্ষ করেন তিনি।
তৃণমূল সাংসদ এদিন বিজেপি ‘সোনার বাংলা’ স্লোগানকে কটাক্ষ করেন। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, ‘দুই তারিখ পদ্ম ফুলকে সর্ষে ফুল দেখবে বিজেপি।‘
লক্ষ্য বাংলা দখল। নির্বাচনী জনসভায় বহু মঞ্চেই বাংলা ভাষায় কিছুক্ষণ কথা বলতে শোনা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে। কখনও ভাঙা, কখনও ভুল বাংলা বলছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে তাঁর বাংলা নিয়ে ট্রোল হয়েছে বিস্তর। তবুও নাকি তিনি চেষ্টা করছেন, যাতে বাঙালির আবেগ স্পর্শ করা যায়। এমনটাই দাবি বিজেপির। তবে সেই দাবি মিথ্যে বলে এদিন দাবি করলেন তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মেদিনীপুরে দাসপুরের সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ''আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে খোলা চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। আপনি আর আমি মুখোমুখি দাঁড়াব। বাংলার যে কোনও জায়গায়, যেখানে আপনি বলবেন, যে কোনও ব্লকে, যে কোনও গ্রামে, যে কোনও মঞ্চে। আপনার বা আমার হাতে কোনও কাগজ থাকবে না। আপনি মাত্র দুমিনিট কাগজ ছাড়া বাংলা বলে দেখান। আপনি দুমিনিট বাংলা বললে আমি কুড়ি মিনিট হিন্দি বলব। আমার বয়স ৩৩। আপনার ৬৮। বেশি কিছু চাইছি না। এটুকুই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। দুমিনিট হাতে কাগজ ছাড়া বাংলা বলুন। বাংলা দখলের স্বপ্ন যখন দেখছেন তখন এটুকু চ্যালেঞ্জ তো সামলাতেই হবে।'
এদিন দাসপুরের সঙ্গে ডেবরায় দলীয় প্রার্থী প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবিরের সমর্থনে রোড শো করেন তৃণমূল সাংসদ। সেখানেও বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'বিজেপিকে ভোট দেওয়া মানে খাল কেটে কুমীর আনা। ত্রিপুরায় উন্নয়নের নামে ক্ষমতা দখল করেছিল। আপনাদের কেউ পরিজন ত্রিপুরায় থাকলে খবর নিএ দেখুন কী অবস্থা সে রাজ্যের।' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'ফের ক্ষমতায় এলে দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেবেন।' এবার আপনারা ভাবুন , কোনটা চান, দুয়ারে রেশন, না পেটভর্তি ভাষণ? এমন প্রশ্ন ছুড়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেক ছাড়াও এদিন পূর্ব মেদিনীপুরে সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন খেজুরিতে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হলদিয়ার সভায় যে মন্তব্য করেন, সেই একই সুর শোনা গিয়েছে খেজুরির সভায়। তিনি বলেন, ‘খেজুরি না থাকলে জমি আন্দোলন সফল হত না তেখালিতে আমার ওপর গুলি চলেছিল।‘ আগামিদিনে আমার সরকার জিতলে এবার দুয়ারে দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেবে।দ্বিগুণ শিক্ষক নিয়োগ হবে। এদিন দাবি করেন তিনি। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘ছয় বছরে শুধু মুল্যবৃদ্ধি করেছে। জ্বালানির দাম বেড়েছে। বেকারত্ব বাড়িয়েছ। আর কী করেছ।‘
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ, ‘কখনও তিনি রবীন্দ্রনাথ, কখন বিবেকানন্দ। ক্ষমতায় এলে তুমি কী করেছ নরেন্দ্র মোদী?’ নিজের নামে স্টেডিয়াম করেছেন, কয়েকদিন বাদে দেশেরনাম বদলে নিজের নামে করে দেবে। এদিন এভাবেই আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরে ৩টি সভা মুখ্যমন্ত্রীর। প্রথম সভাটি তিনি করেন হলদিয়ায়। এদিন হলদিয়ার সভা থেকে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন তিনি।