বিজেপির যুব মোর্চার নবান্ন অভিযানে যুব নেতার দেহরক্ষী বলবিন্দর সিংয়ের পাগড়ি খোলা নিয়ে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। বলবিন্দর সিং নামে ওই প্রাক্তন সেনাকর্মীর কাছে নাইন এম এম পিস্তল উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন মিছিলের মধ্যে বলবিন্দরের পাগড়ি টেনে-হিঁচড়ে খুলে দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মীদের শাস্তি দেওয়ার দাবি উঠেছে। গেরুয়া শিবির তো বটেই, বাংলার পুলিশের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার হরভজন সিং থেকে শুরু করে শিরোমণি অকালি দলের সভাপতি সুখবীর সিং বাদল, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং-সহ শিখ সম্প্রদায়ের একাধিক বড় নেতা। এবার এই ঘটনায় জনরোষের মুখে আত্মপক্ষ সমর্থনে যুক্তি দিল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।
Strongly condemn the vicious attack on a Sikh security official Balwinder Singh & disrespect of his #turban by West Bengal Police. The dishonour has infuriated Sikhs across the world. I urge @MamataOfficial ji to take exemplary action against the erring policemen. pic.twitter.com/o0QUP9pnWJ
— Sukhbir Singh Badal (@officeofssbadal) October 9, 2020
নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং টুইটার হ্যান্ডেলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ লিখেছে, "গতকালের প্রতিবাদের সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি আগ্নেয়াস্ত্র বহন করছিলেন। গোলমালের সময় ধাক্কাধাক্কির জন্য তার পাগড়িটি খুলে পরে যায় (সংযুক্ত ভিডিওতে দৃশ্যমান), পুলিশের কোনওরকম প্ররোচনা ছাড়াই। কোনও সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত করা কখনও আমাদের উদ্দেশ্য নয়। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সকল ধর্মকে সম্মান প্রদর্শন করে। অফিসার তাকে গ্রেফতারের আগে বিশেষভাবে তাঁর পাগড়ি পরে নিতে বলেছিলেন। থানায় নিয়ে যাওয়ার ঠিক আগেই সংযুক্ত ছবিটি সংগ্রহ করা হয়েছিল। রাজ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ"
প্রসঙ্গত, বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে শীর্ষ নেতৃত্ব বলবিন্দরের পাগড়ি খোলা ইস্যুতে তুলোধোনা করেছেন মমতা সরকারের পুলিশকে। তাঁরা শুক্রবার টুইটে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় লিখেছেন, “বৃহস্পতিবারের ওই ছবি দেখে আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছি। বাংলার পুলিশ এ কী কান্ড ঘটিয়েছে! এই ঘটনার জন্য আদালতে মামলা করার অনুরোধ করছি তেজিন্দার পাল সিংকে।” বিজেপির সর্বভারতীয় মুখপাত্র তেজিন্দার পাল সিং বাগ্গা টুইট বার্তায় বলেছেন, “মমতা সরকার যে ভাবে একজন শিখ নিরাপত্তা কর্মীর পাগড়ি খুলে যে অপমান করেছে তাতে ৮৪ সালের দৃশ্য মনে পড়ে যাচ্ছে। দেশের স্বাধীনতায় সব থেকে বলিদান দেওয়া শিখ সম্প্রদায়ের সঙ্গে এমন ব্যবহার করা সরকারের ১ মিনিট ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।”
কলকাতাতেও বিভিন্ন জায়গায় শিখরা পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। বঙ্গ বিজেপির নেতারা এই ঘটনায় গোটা শিখ জাতির অপমান করা হয়েছে বলে তোপ দেগেছেন। তবে পুলিশের বক্তব্য, কোনও জাতি বা ধর্মকে আঘাত করা উদ্দেশ্য ছিল না তাদের। ধস্তাধস্তির সময় পাগড়ি খুলে পড়ে যায়। পরে বলবিন্দরকে পাগড়ি পরে নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের মারে বলবিন্দরের মতো কারগিল যোদ্ধা, সর্বোপরি একজন শিখের অপমান মেনে নিতে পারছেন না কেউই।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন