মাথাভাঙার ঘটনা মমতার উস্কানির ফল। শনিবার থেকে এই অভিযোগে সরব বঙ্গ বিজেপি। রবিবার ভোট প্রচারে এসে সেই তত্বে সিলমোহর বসালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালনার ঘটনা নিয়ে মেরুকরণের রাজনীতি করছেন মুখ্যমন্ত্রী নদীয়ার শান্তিপুরের রোড শোয়ে এই অভিযোগ করেন অমিত শাহ।
মাথাভাঙার ঘটনার পরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'অমিত শাহের কথাতেই গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।' আর এদিন শিলিগুড়ি থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে মাথাভাঙার ওই ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি। এরপর দুপুরে নদীয়ার শান্তিপুরে রোড শো করার পর অমিত শাহ গোটা ঘটনার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিআরপিএফ-কে ঘেরাও করার মন্তব্যকে দায়ী করলেন। সেইসঙ্গে শীতলকুচিতে পাঁচ জনের মৃত্যু হলেও কেন শুধুই চারজনের জন্য শ্রদ্ধার্ঘ্য, আর আনন্দ বর্মনের মৃত্যু নিয়ে কেন চুপ মমতা? সেই প্রশ্নও সংবাদ মাধ্যমের সামনে তোলেন তিনি।
অমিত শাহের মন্তব্য, 'কালকের ঘটনা দুঃখজনক। কিন্তু বুথে অজ্ঞাতপরিচয় জনাকয়েক হামলা করেছিল। সিআরপিএফ-এর উপর হামলা করা হয়েছে। তারপর আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে হয় সিআরপিএফ-কে। তাতে চারজনের মৃত্যু হয়। সেই মৃত্যু দুঃখজনক। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য আরও দুঃখজনক। ওই এলাকাতেই গতকাল সকালে আনন্দ বর্মনকে খুন করা হয়েছে। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই এটা করেছে। কিন্তু মমতা দিদি চারজনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আনন্দ বর্মনকে নয়। মমতা দিদি এখানেও মেরুকরণের রাজনীতি করছেন। কারণ আনন্দ বর্মন রাজবংশী সম্প্রদায়ের। ওখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট পাবেন না, তাই কোনও শ্রদ্ধা নেই।'
এরপর মমতাকে কাঠগড়ায় তুলে শাহ বলেন, 'আপনি শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার কথা বলেছিলেন। আপনার সেই ভাষণ কি এই মৃ্ত্যুর জন্য দায়ী নয়? এই ঘটনা ছাড়া আর কোথাও অশান্তি হয়নি। আপনিই এই ঘটনার জন্য দায়ী। আপনি ক্ষমা চান।'
একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, 'বাংলার নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। বাংলায় নতুন যুগের সূচনা হচ্ছে। আর বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলা থেকে অশান্তি চিরতরে দূর হয়ে যাবে।‘
যদিও অমিত শাহের মমতাকে কাঠগড়ায় তোলার পরেও বাহিনীর গুলি চালনার ঘটনায় সেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তোলে তৃণমূল। দলীয় সাংসদ সৌগত রায় বলেন, 'অমিত শাহ একজন ফ্যাসিস্ট। তাঁর কথাতেই গুলি চালিয়েছে বাহিনী। বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চেনেন। তাই অমিত শাহকে জবাব তাঁরাই দেবে। মমতা ক্ষমা চাইবেন না। কিন্তু কালকের ঘটনার পর আমরা এখনও চাইছি, অমিত শাহ পদত্যাগ করুন।'