Advertisment

ঠাকরে-পট্টনায়েক ফোন করেন সবাই! তবে কি মোদী-বিরোধী মুখ এবার দিদি?

রবিবার দুপুরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ফল স্পষ্ট হতেই তৃণমূল নেত্রীর উদ্দেশে প্রথম ট্যুইট করেন উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টি নেতা অখিলেশ যাদব।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Mamata Banerjee bags huge victory in Bengal Poll 2021, Anti-BJP Front, Uddhav, Nabin, Modi, TMC

কালীঘাটে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা।

সোমবার কালীঘাটের তৃণমূল ভবন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো অ-বিজেপি ফ্রন্ট গঠনের ইঙ্গিত দেন। এদিন তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের একাধিক বিজেপি বিরোধী দলের নেতা এবং মুখ্যমন্ত্রীরা তাঁকে ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন।‘ কারা রয়েছেন সেই তালিকায়? মমতা বলেন, ‘আমাকে উদ্ধবজি ফোন করেছিলেন উনি খুব খুশি। রজনিকান্ত ফোন করেছিলেন। অরবিন্দের সঙ্গে আমরা দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছে। হুডাজি (হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী) এবং অমরিন্দর সিংজি-ও আমাকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন।‘ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জাতীয় রাজনীতিতে অঘোষিত বিজেপি ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক তাঁকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছে। কালীঘাটে এই দাবিও এদিন করেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

Advertisment

আমরা সবাই এক হয়ে কাজ করব সেই ব্যাপারে কথা হয়েছে। এদিন এই ইঙ্গিত দিলেন মমতা। তাহলে ২০২৪-এর সাধারণ নির্বাচনে কি বিজেপি বিশেষ করে মোদী-বিরোধী ফ্রন্টের নেতৃত্বে তৃণমূল সুপ্রিমো? রবিবার বঙ্গ ভোটের ফল স্পষ্ট হতেই এই প্রশ্ন ঘুরেফিরে তুলছেন পর্যবেক্ষকরা।

এদিকে, নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহদের প্রবল চেষ্টা, দাবি উড়িয়ে বাংলার মসনদে তৃতীয় বারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বসা নিশ্চিত। রবিবার সর্বভারতীয় একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেলের প্রশ্ন ছিল, 'এবারের নির্বাচন কি বেশি চ্যালেঞ্জের ছিল?'  

বাংলার ২৯৪টি কেন্দ্রেরই জয়ী ‘প্রার্থী’ মমতা উত্তর দেন, 'গোটা দেশের নিরিখে এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা মানুষের আশীর্বাদে সেই নির্বাচন জিতেছি। গোটা দেশের মানুষের জন্য এই নির্বাচন আমার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।'

স্বাভাবিক ভাবেই তাহলে প্রশ্ন উঠবে, তাহলে কি এবার লক্ষ্য দিল্লি? মমতার উত্তর, 'এখন প্রথম লক্ষ্য বাংলার মানুষকে করোনা থেকে রক্ষা করা। সেটা আগে মিটিয়ে বাকি সব কিছু।'

অর্থাৎ, ঘুরিয়ে হলেও বার্তা স্পষ্ট, দিল্লি নজরেই রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। বস্তুত রবিবার দুপুরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ফল স্পষ্ট হতেই তৃণমূল নেত্রীর উদ্দেশে প্রথম ট্যুইট করেন উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টি নেতা অখিলেশ যাদব। খানিকটা মুলায়ম পুত্রের অনুরোধেই বঙ্গ ভোটের প্রচারে তৃণমূলের হয়ে রোড শো করে গিয়েছেন সাংসদ জয়া বচ্চন। ভোট ঘোষণার আগে ব্যক্তিগত ভাবে মমতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন লালু পুত্র তেজস্বী যাদব।

আর রবিবার ‘দিদি’র হ্যাটট্রিক চূড়ান্ত হতেই শিবসেনা, আপ থেকে ন্যাশনাল কনফারেন্স, পিডিপি, বিজেপি-বিরোধী সব শক্তি মমতার লড়াকু, একরোখা ভূমিকার অকুন্ঠ প্রশংসা করেছেন।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছে একের পর এক টুইট ও বিবৃতি। যেন তাঁরাও ধরে নিয়েছেন, মোদিকে হারাতে মমতাই হতে পারেন একমাত্র মুখ। প্রসঙ্গত, বাংলা ছাড়া অসম, তামিলনাড়ু, কেরালা ও পুদুচেরিতে 'প্রত্যাশিত' ফলই করেছে গেরুয়া শিবির। অসমে ফের ক্ষমতায় আসা, তামিলনাড়ু-কেরলে পরাজয়, কেন্দ্রশাসিত পুদুচেরিতে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা। সব মিলিয়ে ৫ রাজ্যের নিরিখে বিজেপির পক্ষে ফল ১-৩।

রাজনৈতিক মহলের মতে, জয় অনেকটা আফিমের নেশার মতো, যা কিছু মানুষকে মারাত্মক এনার্জি দিয়ে থাকে। মমতার কাছেও নির্বাচন জয় অনেকটা তেমনই। নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজারে ভোটের কত আগে পায়ে চোট পান মমতা। চিকিৎসকরা তাঁকে এক মাসের বিশ্রামে থাকতে বললেও তা মানেননি তৃণমূল নেত্রী। দিন দুই পর থেকেই পায়ে প্লাস্টার আর হুইল চেয়ারকে সঙ্গী করে বেরিয়ে পড়েছিলেন ভোট প্রচারে। তারপর থেকে সেই হুইল চেয়ার নিয়েই শেষ করলেন বাংলার ভোট। 'নিজের' পায়ে উঠে দাঁড়ালেন রবিবার, বাংলা জয়ের পর। আর রবিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে তাঁর দলের জয় স্পষ্ট হতেই তিনি নিশ্চিত করলেন ‘ভাঙা পায়েই খেলা হয়েছে।‘

tmc modi Uddhav Nabin
Advertisment