বিজেপিতে বাবুল সুপ্রিয়র যাত্রা শেষ। সেই ৩১ জুলাই যখন তিনি ফেসবুক পোস্টে ঘোষণা করেছিলেন, তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নিচ্ছেন, সেদিনও ঘুরিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বলেছিলেন, মাসির গোঁফ হলে মাসি বলব না মেসো, তা ঠিক করব। আগে মাসির গোঁফ হোক। সেই মন্তব্য নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। আজ, শনিবার যখন বিজেপি ছেড়ে বাবুল তৃণমূলে গেলেন সেদিন মুখে কুলুপ আঁটলেন দিলীপ। সরাসরি দিল্লির হাইকম্যান্ডের ঘাড়ে দায় ঠেললেন মেদিনীপুরের সাংসদ।
বঙ্গ বিজেপিতে দিলীপ বনাম বাবুল বহুদিনের সমস্যা। তাঁদের বিবাদ রাজনৈতিক মহলে সুবিদিত। অনেক দিন ধরেই বিজেপির থেকে দূরত্ব তৈরি করেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব অনেকদিনের। বিধানসভা ভোটে বিজেপির ভরাডুবির পর তা আরও প্রকট হয়। তারপর গত মাসে নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সময় তাঁকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য করা হয়। রাজনৈতিক মহলে কানাঘুষো ছিল, টালিগঞ্জে বিরাট ব্যবধানে হারের কারণেই তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়।
আরও পড়ুন অর্পিতার জায়গায় কি রাজ্যসভায় বাবুল সুপ্রিয়? তৃণমূলের কৌশল নিয়ে তুঙ্গে জল্পনা
তারপর আচমকা যেদিন রাজনীতি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন বাবুল, সেদিনই সাংবাদিক সম্মেলনে খোঁচা দেন দিলীপ। বলেন, "মাসির গোঁফ হলে মাসি বলব না মেসো, তা ঠিক করব। আগে মাসির গোঁফ হোক। তাঁকে যদি স্যাক করা হত তাহলে কি ভাল হত? পদ্ধতি মেনেই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে। আপনি পদ থেকে সরে যান, অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। ১২ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। কেউ তো এমন লেখেনি। পার্টির কাজ করছি, বিধায়ক সাংসদ যা হয়েছি তা তো পার্টির জন্যই।"
আরও পড়ুন ‘শেষ তিন-চারদিনে সিদ্ধান্ত নিয়েছি’, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়ে মন্তব্য বাবুলের
উল্লেখ্য, দিলীপের এই খোঁচা ছিল বাবুলের মন্ত্রিত্ব খোয়ানো নিয়ে। যা মোটেই ভাল ভাবে নেননি বাবুল। পাল্টা তিনিও সোশ্যাল মিডিয়ায় খোঁচা দেন। লেখেন, "উনি রাজ্য সভাপতি, সবার শ্রদ্ধার পাত্র। আমিও আন্তরিক ভাবে শ্রদ্ধা জানালাম প্রিয় দিলীপদাকে।" আজ যখন বাবুল তৃণমূলে যোগ দিলেন তখন দিলীপের প্রতিক্রিয়া, "আমি কিছু বলব না। যা বলার দিল্লি বলবে।" মনে করা হচ্ছে, দিলীপ-বাবুল বিবাদে নিয়ে যেভাবে পরে হাইকম্যান্ড আসরে নামে, এবং সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা খোদ বাবুলের সঙ্গে বৈঠক করেন, তাতে কিছুটা অসন্তুষ্ট হন দিলীপ। তাই এদিন বাবুল তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় যাবতীয় দায়ভার দিল্লির ঘাড়েই চাপালেন রাজ্য সভাপতি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন