ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘোষণা হলেও শেষপর্যন্ত বিজেপির রোড শোয়ে আসেননি শোভন-বৈশাখী। যার জেরে মুখ পোড়ে গেরুয়া শিবিরের। কিন্তু কেন এলেন না তাঁরা? শোনা গিয়েছিল, গোঁসার কারণে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় মিছিলে যেতে আপত্তি করেন। বান্ধবীর জন্য রাস্তায় নামেননি শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। দুজনের এই কাণ্ডে চরম অস্বস্তিতে পড়ে বঙ্গ বিজেপি। মুরলীধর সেন লেনের অফিসে শোভন-বৈশাখীর জন্য বরাদ্দ ঘরের দরজা থেকে তাঁদের নাম লেখা কাগজও ছিঁড়ে ফেলা হয়। তালা দিয়ে দেওয়া হয় ঘরে। বিতর্কের একদিন পর এ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন বৈশাখী। জানালেন, অসুস্থতার জন্য যাননি রোড শোয়ে। সেই কারণে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমকে বিজেপি নেত্রী জানিয়েছেন, "কর্মী-সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ২ জানুয়ারি ভুবনেশ্বর থেকে কলকাতায় ফিরি। ৩ তারিখ রাত দেড়টা পর্যন্ত মিটিং চলছিল। রাতের দিকে শরীর আর দিচ্ছিল না। রক্তচাপ ওঠানামা করছিল। আমার থেকেও বেশি অসুস্থ ছিলেন শোভনবাবু। জ্বর ছিল তাঁর।" তবে অসুস্থ হলেও মিছিলে থাকার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। বৈশাখী বলেছেন, "কাউকে হতাশ করতে চাইনি। মিছিলে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম। রাকেশ সিংকে জানিয়েছিলাম, যদি না আসি মিছিল যেন না থামে। সেটা যেন ছন্দেই হয়। পুলিশ প্রথমে অনুমতি দিচ্ছিল না। সেটা নিয়েও আশঙ্কায় ছিলাম। শেষপর্যন্ত মিছিল হয়েছে, এটাই স্বস্তির।"
আরও পড়ুন শোভনের বাড়িতে তৃণমূল বিধায়ক, অস্বস্তি বাড়ল জোড়া-ফুলের
প্রসঙ্গত, শোভন-বৈশাখীর অবস্থান নিয়ে দলের অন্দরেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। রবিবার গভীর রাত অবধি বৈঠক বা যে ধরনের পরিস্থিতিই হোক না কেন সোমবারের মিছিলে অংশ না নেওয়ায় রাজ্যবাসীর কাছে দলের মুখ পুড়েছে বলে মনে করছে রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ। তাঁরা এ বিষয়ে কড়া অবস্থানের পক্ষপাতী। তৃণমূলের একাধিক নেতা-নেত্রী বিজেপিতে যোগ দিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে। এমনকী সদ্য যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী টানা দলীয় কর্মসূচিতে রয়েছেন। এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম শোভন-বৈশাখী।
তবে বৈশাখী জানিয়েছেন, বিধানসভাকে সামনে রেখে রণনীতি সাজাচ্ছেন তাঁরা। শরীর খারাপ হলেও মন খারাপ হয়নি তাঁদের। জানিয়েছেন, "এত বড় জোনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে কাজ শুরু করলে কোনওভাবেই টার্গেটে পৌঁছনো সম্ভব নয়। প্রতিদিন বৈঠক চলছে। শোভনবাবু কাজ ভাগ করে দিচ্ছেন। আগামী দিনে সাংবাদিক বৈঠকও করবেন তিনি। দলের কাজে আমরা নিয়োজিত।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন