পুরভোটের দিন যেখানেই যাচ্ছিলেন, সেখানেই বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন। ২ মার্চ ফল কী হতে চলেছে তা-ও বোধহয় আঁচ করতে পেরেছিলেন। কিন্তু এই অবস্থা হবে তা মনে হয় মাথাতেও আসেনি তাঁর। দেখা গেল, তিন দশকের কংগ্রেসের গড় বহরমপুর হাত-ছাড়া হল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরির নিজের ঘাঁটিতেই শোচনীয় পরাজয় কংগ্রেসের। শুধু তাই নয়, বহরমপুরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে অধীরের পাড়ায় হেরেছে হাত-শিবির।
বহরমপুর পুরসভা প্রথমবার দখল করল তৃণমূল। ২৮টির মধ্যে ২২টি ওয়ার্ডেই জিতেছে তৃণমূল। ৬টিতে জিতেছে কংগ্রেস। ২০১৫ সালে পুরভোটেও বহরমপুর দখলে রেখেছিল কংগ্রেস। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বহরমপুর আসন হাতছাড়া হওয়ার পর এবার পুরসভাও হাত থেকে গেল কংগ্রেসের।
অধীর চৌধুরির হতাশা বাড়িয়েছে নিজের পাড়া ২ নম্বর ওয়ার্ডে হেরেছে কংগ্রেস। বহরমপুর তিন দশক পর হাতছাড়া হওয়ায় অধীর বলেছেন, "২৮টি ওয়ার্ডেই জয় পেতে পারত তৃণমূল। কংগ্রেসের যে ৬ জন জিতেছেন তাঁদের সাফল্য অক্সিজেন ছাড়া এভারেস্ট চড়ার সমান।"
আরও পড়ুন ভোঁতা অর্জুন-বাণ, ভাটপাড়ায় ফুটলো জোড়া-ফুল
প্রসঙ্গত, পুরভোটের দিন পথে নেমেছিলেন অধীর। কিন্তু বহরমপুর-সহ মুর্শিদাবাদের সর্বত্র তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সেই নিয়ে কমিশনে অভিযোগও জানান তিনি। ভোটের পরের দিনও ভোট-সন্ত্রাসের অভিযোগে আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও একই চিত্র। বহরমপুরে ঝাঁটা দেখানো হয় তাঁকে। বিরক্ত হয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখে তিনি অভিযোগ করেন, যেখানেই যাচ্ছেন তাঁকে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন প্রবল সবুজ ঝড় দিলীপ-গড় খড়গপুরে, জিতে পদ্মের মান রাখলেন হিরণ
এবারের পুরভোটে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়নি তা জোর গলায় দাবি করে আসছিলেন অধীর। কিন্তু মুর্শিদাবাদের একটি পুরসভাও জিততে পারেনি কংগ্রেস। বহরমপুরে আগের পুরভোটে ২৬টি আসনে জিতেছিল কংগ্রেস। তৃণমূল পেয়েছিল ২টি। সাত বছর পর চিত্র পাল্টে গেল। এখন তৃণমূল ২২-কংগ্রেস ৬। দেড়শো বছরের পুরনো এই পুরসভায় হার এবার বহরমপুরে অধীর-ক্যারিশ্মাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।