লক্ষ্য বিজেপির মতুয়া ভোটে ভাগ বসানো। তাই রবিবার গাইঘাটায় সিএএ নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। গত লোকসভা নির্বাচনে এই ভোটের অনেকটাই বিজেপিমুখী। সেই সমীকরণকে মাথায় রেখে বিধানসভা ভোটের আবহে ঠাকুরনগরে বিরাট সভা করেছেন অমিত শাহ। বাংলাদেশের গিয়ে মতুয়াভূম ওরাকান্দি সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এবার মতুয়া ভোট অধ্যুষিত অপর এক বিধানসভা কেন্দ্র গাইঘাটায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘মতুয়াদের স্বার্থ রক্ষার জন্য তাঁকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছিলেন বড়মা বীণাপাণি দেবী।‘
বৃহস্পতিবার গাইঘাটার গোবরডাঙা হিন্দু কলেজ ময়দানে জনসভা করেন মমতা। মতুয়াদের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর মাধ্যমে নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। তা নিয়ে গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণ শানান মমতা। মতুয়াদের বলেন, ‘সকলে নাগরিক। কে নাগরিক নয়? আপনারা যদি নাগরিক না হন আপনাদের জমি, বাড়ি, গাড়ি নেই? সবাই নাগরিক। আমরা সবাই সমান। আপনাদের আলাদা করে নাগরিকত্ব আবার কী দেবে? নির্বাচন এলেই মিথ্যা কথা বলে ভোট চাওয়া। ভাঁওতাবাজি। আর সারা বছর মতুয়ারা কেমন আছে, তা কি একবারও দেখার চেষ্টা করে?’
সম্প্রতি বাংলাদেশে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতুয়া তীর্থক্ষেত্র ওড়াকান্দি সফর নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। প্রধানমন্ত্রীর সেই সফরকে নিশানা করে তাঁর তোপ, ‘তুমি প্রধানমন্ত্রী প্রতিবার বাংলাদেশ যাও আমাকে নিয়ে। তার কারণ শেখ হাসিনা আমাকে ভালবাসেন। কই, এ বার লুকিয়ে লুকিয়ে গেলে, এখানকার একটা ছোকরাকে নিয়ে। কই তখন তো আমাকে নিয়ে গেলে না। ভোটের জন্য যেতে হল। মমতা বাংলাদেশিদের, অনুপ্রবেশকারীদের মদত দেয়। মমতা গেলে বিষ হয়, আর তুমি গেলে বিষক্ষয় হয়?’
এই সূত্র টেনেই তিনি বলেন, ‘মতুয়াদের অধিকার জন্মগত। অধিকার তারা পেয়েছে। এ অধিকার নতুন করে দেওয়ার কিছু নেই।’ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রভাব আছে এমন এলাকায় দলের টিকিট দেওয়া নিয়ে ঠাকুর পরিবারের একটি বিশেষ অংশের প্রতি পক্ষপাত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। এই প্রসঙ্গেই বিজেপি-র প্রতি তাঁর প্রশ্ন, ‘কই একটা গোঁসাই, দলপতি, কিংবা সাধারণ সমর্থককে তো টিকিট দাওনি?’
সিএএ নিয়ে বিজেপি নেতারা দ্বিচারিতা করছেন বলেও অভিযোগ মমতার। তাঁর দাবি, ‘এখানে এসে বলছে মতুয়াদের অধিকার দেবে। আবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতে গিয়ে বলছে সিএএ হবে না। এক একটা জায়গায় গিয়ে এক এক রকম কথা বলছে। ওদের মুখোশ খুলে পড়ছে। ওদের বহুরূপী চরিত্র। কখনও টিকটিকি, কখনও গিরগিটি, কখনও নেংটি ইঁদুর, কখনও বেড়াল। লোকসভায় মতুয়ারা তো ভোট দিয়েছিল। কিন্তু বিজেপি একটা কাজ করেছে?’
এর পরই মমতা দাবি করেন, ‘বড়মা (বীণাপাণি দেবী)-র হাতে লেখা চিঠি আমার কাছে অনেকগুলো আছে। তিনি বলেছিলেন, আমার অবর্তমানে তুমি ওদের দেখে রেখো। চিন্তা করবেন না। আমি দেখে রাখব।’