ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে নিপীড়িতদের দেখতে আসাম সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। টুইট করে মমতাকে বার্তা দিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ, সংঘাতের পথ ছেড়ে সহযোগিতামূলক ও সাংবিধানিক অবস্থান গ্রহণ করুন। এতেই গণতন্ত্রের বিকাশ হবে। আইনের শাসন জোরদার করুন এবং মানুষের স্বার্থে কাজ করুন।
এদিন, তিনি কোচবিহারের জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, কোচবিহারের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার অপ্রতিক্রীয়াশীল এবং যোগাযোগের ধার ধারেননি। সেখানে আসামে যাবতীয় প্রোটোকল মেনে রাঙ্গাপালিতে উপস্থিত রয়েছেন ডিভিশনাল কমিশনার, স্পেশ্যাল ডিজি, জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার।
রাজ্যপাল শুক্রবার আসামের ধুবুড়ি জেলার আগমনিতে যান। আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে হেলিকপ্টারের বদলে গাড়িতে কোচবিহার থেকে ধুবুড়িতে যান তিনি। সেখানে রাঙ্গাপালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজনৈতিক হিংসায় ঘরছাড়াদের জন্য শরণার্থী শিবির বানিয়েছে বিজেপি। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন কোচবিহারের বক্সিরহাট, তুফানগঞ্জ-সহ একাধিক এলাকার আক্রান্ত বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ঘরে ফেরানোর আশ্বাস দেন রাজ্যপাল। ধনকড়কে দেখে কান্নায় ভেঙে পায়ে পড়ে যান মহিলারা।
আসাম থেকে ফিরে এসে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য প্রশাসনকে ফের তোপ দাগেন ধনকড়। শিলিগুড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, "পছন্দ মতো দলকে ভোট দেওয়ার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নির্বিচারে আক্রান্ত হতে হচ্ছে বিরোধীদের। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথ। রাজ্যে বেলাগাম হিংসা চলছে। বাংলার পরিস্থিতি ভয়াবহ। আর সহ্য করা যাচ্ছে না।" এদিন তিনি কোচবিহারে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার সাফাই দিয়েছেন রাজ্যপাল। বলেছেন, "সাংসদ কোনও একটা দলের হয় না। তিনি এলাকার জনপ্রতিনিধি। নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রের ভালমন্দ দেখার দায়িত্ব তাঁর।"
এদিকে, কোচবিহার সফরের জন্য রাজ্যপাল পদ থেকে ধনকড়ের অপসারণের দাবি তুলল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের দাবি, বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসায় ইন্ধন যোগাচ্ছেন ধনকড়। তিনি আর রাজ্যপাল পদে থাকার যোগ্য নন। তিনি আরও বলেছেন, দিল্লির শাহেনশাদের এজেন্ট ধনকড়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে হিংসায় ইন্ধন দিচ্ছেন তিনি। বিজেপি নেতার মতো কাজ করছেন। তিনি রাজ্যপালের পদে থাকার যোগ্যই নন। দ্রুত তাঁকে অপসারণ করা উচিত। নিশীথ প্রামাণিককে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে সুখেন্দুশেখর রায়ের কটাক্ষ, ‘‘একজন কুখ্যাত সাংসদকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন উনি। ওসিকে ধমকাচ্ছেন। ওনাকে বরখাস্ত করা উচিত।’’