ভোট গণনার ট্রেন্ডে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হ্যাটট্রিক করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে নন্দীগ্রামেও তিনি ১২০০ ভোটে হারান নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীকে। দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে যখন সবুজ ঝড় তখন পাহাড়ে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে তৃণমূল এবং তার সহযোগী দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (জিজেএম)-র বিমল গুরুং গোষ্ঠীকে।
পাহাড়ের তিনটি আসন দার্জিলিং, কালিম্পং এবং কার্শিয়াং বিমল গুরুংদের ছেড়েছিলেন ছেড়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু ভোট গণনার প্রবণতা বলছে পাহাড়ে দ্বিতীয় স্থানও পায়নি বিমলের দল। সেখানে মূল লড়াই হয়েছে বিনয় তামাং-অনিক থাপার নেতৃত্বাধীন মোর্চা-গোষ্ঠীর সঙ্গে বিজেপি-র।
দার্জিলিংয়ে বিনয়-অনিক গোষ্ঠীর প্রার্থী কেশবরাজ পোখরেল শর্মা প্রায় ৩৭ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন সকাল থেকেই। পাহাড় থেকে বিজেপি-র ঝুলিতে এসেছে প্রায় ৩৫ শতাংশ ভোট। বিমল গোষ্ঠীর প্রার্থী পেম্বা শেরিং ওলা ১৯ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট পেয়েছেন। কালিম্পংয়েও প্রায় ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন বিনয়-অনিক গোষ্ঠীর প্রার্থী রুদেন সদা লেপচা। বিজেপি ৩৩ শতাংশ এবং বিমল গোষ্ঠীর প্রার্থী রাম ভুজেল ২০ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
তবে, কার্শিয়াং কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। সেখানে ৪০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছেন পদ্ম প্রতীকের প্রার্থী বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা ওরফে বি পি বজগঁই। বিনয়-অনিক গোষ্ঠীর প্রার্থী শেরিং লামা দহাল পেয়েছেন প্রায় ৩২ শতাংশ ভোট। বিমল গোষ্ঠীর প্রার্থী নরবু লামা ২০ শতাংশের সামান্য বেশি। বিধানসভা ভোটের আগে পাহাড়ের ১৩টি জনজাতি উন্নয়ন বোর্ডের যৌথমঞ্চের তরফে বিনয়-অনিক গোষ্ঠীকে সমর্থন জানানো হয়েছিল। যদিও বেলা বাড়ার সঙ্গেই দার্জিলিংয়ের ৫টি আসনের মধ্যে সবক’টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। তবে গুরুংয়ের পথের কাঁটা সেই যৌথ মঞ্চই। এমনটাই বলছে রাজনৈতিক মহল।
এদিকে, লোকসভা ভোটের নিরিখে হুগলি জেলার উপরে অনেকটাই ভরসা করেছিল বঙ্গ বিজেপি। ২০১৯-এর নির্বাচনে এই জেলায় একটি মাত্র আসনেই জয় পায় গেরুয়া শিবির। হুগলি কেন্দ্রে জিতেছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। তবে আরামবাগ আসনেও অল্প ব্যবধানে হার মানতে হয় বিজেপি-কে। লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে জেলার ১৮টি আসনের মধ্যে ৮টিতে এগিয়ে ছিল বিজেপি। দু’টি লোকসভা আসন শ্রীরামপুর ও আরামবাগে তৃণমূল জিতলেও মোট ১০টি আসনে এগিয়ে ছিল তৃণমূল।
কিন্তু বিধানসভা ভোটের ফল ট্রেন্ডিং অন্য কথা বলছে। এই জেলার ১৮টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১০টির বেশি আসনে এগিয়ে তৃণমূল। পাশাপাশি মাত্র ৫টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। ইতিমধ্যে সিঙ্গুর থেকে তৃণমূল প্রার্থী বেচারাম মান্না জয়ী হয়েছেন নিকটতম বিজেপি প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে হারিয়ে। অপরদিকে। চুচুড়া থেকে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় আর তারকেশ্বর থেকে স্বপন দাশগুপ্ত পিছিয়ে রয়েছেন। শ্রীরামপুর, চন্দননগর, উত্তরপাড়ার মতো আসনে এগিয়ে তৃণমূল।