বঙ্গ ভোটের সবচেয়ে মেগা লড়াই নন্দীগ্রামে। ফুটবলের ভাষায় ডার্বির ‘খেলা হবে’ পূর্ব মেদিনীপুরের এই বিধানসভা কেন্দ্রে। কারণ এই কেন্দ্রে যুযুধান দুই মহারথীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও একদা তাঁর আস্থাভাজন শুভেন্দু অধিকারী। যদিও গত নভেম্বরে দল ছাড়া ইস্তক তৃণমূল শুভেন্দুকে 'মীরজাফর' বলে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে।
মঙ্গলবারই বাঁকুড়ার মেজিয়ার সভা থেকে শুভেন্দুর নাম উল্লেখ না করে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেছেন, 'আমাদের দল থেকে কয়েকজন বেরিয়ে যাওয়ায় এই দল এখন শুধুই মানুষের দল। মীরজাফররা চলে গিয়েছে, গুন্ডারা চলে গিয়েছে। আমি বেঁচে গিয়েছি।' এদিন যেন তারই জবাব দিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী। তৃণমূল কেন ছাড়লেন, তারই সাফাই দিতে গিয়ে নিজেকে 'ঘরের ছেলে' দাবি করে শুভেন্দু নন্দীগ্রামের সভামঞ্চে বলেন, 'আমাকে ইয়েস ম্যাম-ইয়েস ম্যাম করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা আমি বলতে পারতাম না। শুভেন্দুকে নিয়ে সেটাই সমস্যা তৃণমূল কোম্পানির।'
এদিকে, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার দাবি করে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ অধিকারী বাড়ির মেজো ছেলে। বরাবরের মতো এদিনও তার অন্যথা হয়নি। শুভেন্দুর দাবি, 'গত বছর অবধি যাঁরা আসেননি, আগামী বছর যাঁরা আসবেন না, তাঁরা এখন এখানে আসছেন। যাঁরা নন্দীগ্রামে গুলি চালিয়েছিল, তাদের দলে নিয়েছে তৃণমূল, অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের পদোন্নতি দিয়েছে। কিন্তু আমি, আপনাদের গ্রামের ছেলে সেই সব শহিদ পরিবারেরে কাছে দায়বদ্ধ। ভোট থাকুক না থাকুক, পদ থাকুক না থাকুক, নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী ছিল, থাকবে।' এমনকী এবার নন্দীগ্রামে কীভাবে ভোট হবে, তাও যেন জানিয়ে দেন তিনি। বলেন, ‘এবার সবাই নিজে ভোট দেবেন, ব্যবস্থা আমি করব। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় নতুন ভোট দেখবেন আপনারা।’ যদিও এই কথাটা নির্বাচনী নির্ঘণ্ট বেরনোর দিন থেকে বলে আসছেন রাজ্যের একদা পরিবহণ মন্ত্রী।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে শুভেন্দু প্রতি সভায় অনুরোধের সুরে বলছেন, 'বাংলাকে মোদিজির হাতে তুলে না দিলে বাংলা বাঁচবে না।' এদিনও 'মোদিজি'র হয়ে সওয়াল করেন তিনি। তৃণমূলকে নিশানা করতে গিয়ে বলেন, 'লকডাউনে মোদিজি বিনা পয়সায় রেশন দিয়েছেন। বিনে পয়সার গ্যাস দিয়েছে। আর এখন তৃণমূল বলছে, ক্ষমতায় ওরা না এলে এসব বন্ধ হবে।' এক সঙ্গে এদিনও প্রত্যয়ের সুরেই তিনি বলেন, 'আমিই জিতব, আমিই জিতব, আমিই জিতব।' যদিও তৃণমূলের কটাক্ষ, নন্দীগ্রামে হার নিশ্চিত জেনেই অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন নব্য বিজেপি নেতা শুভেন্দু।