শীতলকুচি-কাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ অবিলম্বে প্রকাশ্যে আনতে দাবি জানাল বিজেপি। ঘটনার প্রায় ৩ দিন পরেও কেন সেই ফুটেজ বাইরে এল না? এই প্রশ্ন তুলে রাজ্যের নিরাপত্তা অধিকর্তা জ্ঞানবন্ত সিংযের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। মমতা ঘনিষ্ঠ হিসেবে সেই ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে না এনে বিষয়টা ধামচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন ওই আইপিএস। এমন অভিযোগ করেছে গেরুয়া শিবির। এদিন জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, 'শীতলকুচিকাণ্ডে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাহলে এই ঘটনার তদন্ত কে করবে? কমিশন না সিআইডি? এই প্রশ্নের উত্তর বুঝতে পারছি না। সিআইডি নিজেদের মতো তদন্ত করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করবে। কারণ সিআইডি মমতার হাতে রয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি জ্ঞানবন্ত সিংহ এখন সব রিপোর্ট চেপে দেওয়ার কথা বলেছেন। আমরা চাইছি এই সব রিপোর্ট সামনে আসুক। প্রকৃত তদন্ত হোক, সত্য সামনে আসুক।'
শীতলকুচি হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জের। এবার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ৪৮ ঘণ্টার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার প্রচারে। কোনওরকম শোকজ ছাড়াই তাঁকে ব্যান করল নির্বাচন কমিশন। যা একপ্রকার নজিরবিহীন ঘটনায় এবারের নির্বাচনে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা কোনওরকম নির্বাচনী প্রচার, মিছিল, সভা করতে পারবেন না প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি।
কী বলেছিলেন রাহুল সিনহা? শীতলকুচিতে সিআরপিএফ-এর গুলিতে চতুর্থ দফার ভোটে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতির উত্তাপ তুঙ্গে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে কমিশন ‘চক্রান্ত’ করে এই ঘটননা ঘটিয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের। গণতন্ত্রের উৎসবে মর্মান্তিক এই পরিণতিতে ‘নজিরবিহীন গণহত্যা’ বলে তোপ দেগেছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যদিকে, তৃণমূল নেত্রীর উস্কানিতেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে পাল্টা দাবি খোদ অমিত শাহর। মমতার বিরুদ্ধে মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, ‘শীতলকুচিতে পাঁচ জনের মৃত্যু হলেও কেন শুধুই চারজনের জন্য শ্রদ্ধার্ঘ্য, বিজেপি সমর্থক আনন্দ বর্মনের মৃত্যু নিয়ে কেন চুপ মমতা?’
বিতর্ক উস্কে আরও বিস্ফোরক রাহুল সিনহা। তাঁর কথায়, ‘বিজেপি করার অপরাধে ভোটের লাইনে দাঁড়ানো নিরীহ ভোটারদের যারা গুলি করে মারছে তাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যারা বোমা ছুঁড়ছে তাদের নেত্রী মমতা। মস্তানরাজ কায়েম করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই গুলি করে সঠিক জবাব দিয়েছে সিআরপিএফ। ৪ জন নয়, ৮ জনকে গুলি করে মারা উচিত ছিল।’
রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী তথা হাবড়ায় রাহুল সিনহার প্রতিপক্ষ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, ‘নিজের চরম শত্রুকেও এভাবে মেরে ফেলার কথা বলা যায় না। রাহুল সিনহা পাগল হয়ে গেছেন। উনি ভোটে কখনও জেতেননি আর এবার আরও রেকর্ড ব্যবধানে হারবেন। তাই পাগলের প্রলাপ বকছেন।’ রাহুল সিনহার বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ জানায় তৃণমূল। তারপরেই কমিশনের এই সিদ্ধান্ত।