নির্বাচনের ফল ঘোষণা হতেই 'গদ্দার'দের ছাঁটাই পর্ব শুরু হয়েছে তৃণমূলে। কয়েকদিন আগেই পূর্ব মেদিনীপুরে 'দাদার অনুগামী' সন্দেহে দলবিরোধী কাজের জন্য প্রাক্তন বিধায়ক ও জেলা কর্মাধ্যক্ষকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এবার অধিকারী পরিবারের সেজো ছেলের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্য কমিটিকে সুপারিশ করল জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী এখনও তৃণমূলেই রয়েছেন। কিন্তু ভোটের সময় তিনি শুভেন্দু ও বাবা শিশির অধিকারীর সমর্থনেই কথা বলেছেন।
সোমবার বিরোধী দলনেতা হিসাবে নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে বেছে নিয়েছে বিজেপি। যিনি কি না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছেন। এর পিছনে সেজো অধিকারীর অন্তর্ঘাত দেখছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেছেন, ‘‘আমরা আমাদের সুপারিশ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। এ বার তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই চূড়ান্ত হবে।’’
গত বছরের শেষদিক থেকেই অধিকারীদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে তৃণমূলের। শুভেন্দুর হাত ধরে বিজেপিতে গেছেন ছোট ভাই সৌম্যেন্দু। বাকি ছিলেন শিশির ও সেজো ছেলে দিব্যেন্দু। এগরায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় হাজির হয়ে শিশিরও দলের চক্ষুশূল হয়েছেন। বাকি ছিলেন দিব্যেন্দু। তিনি অবশ্য শিবির বদল না করলেও তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নেই বললেই চলে। তার উপর ভোটের সময় নন্দীগ্রামে মমতার দাঁড়ানো নিয়ে কটাক্ষও শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়।
এবারের নির্বাচনেও তৃণমূল সাংসদ হিসাবে নিষ্ক্রিয় থেকেছেন দিব্যেন্দু। প্রচার তো দূরের কথা, জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কোনও যোগাযোগই রাখেননি। জেলা তৃণমূল চাইছে রাজ্য কমিটি দিব্যেন্দুকে বহিষ্কার করুক। এমনিতেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় খুব একটা খারাপ ফল হয়নি তৃণমূলের। কিন্তু ৭টি আসনে হেরেছে ঘাসফুল শিবির। যার অধিকাংশই তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এই অবস্থায় পরিস্থিতিতে দিব্যেন্দুর মন্তব্য, ‘‘দল আমার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিলে, তবেই আমি সেই প্রসঙ্গে কথা বলব। তার আগে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’