অভিযোগ মিলেছে জেলায় সাজিয়ে গুছিয়ে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা চলছে। সতর্ক মুখ্যমনন্ত্রী সেই কথা জানিয়েই পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে সমঝে দিলেন। সঙ্গে জিজ্ঞাসা করলেন রাজ্যপাল তাঁকে ফোন করে কিনা? পুলিশ সুপারের উফর কোনও রাজনৈতিক চাপ রয়েছে কিনা?
Advertisment
নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীন বৃহস্পতিবার হঠাৎই পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে খোঁজেন। তারপরই এসপি অনরনাথের কৈফিৎ তলব করেন তিনি। বলেন, 'তোমার জেলা নিয়ে বেশ কয়েকটা অভিযোগ পেয়েছি। কাউকে সাজিয়ে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে। পলিটিক্যাল লিডাররা ইন্ধন দেয়। অনেকদিন ধরে আমি দেখে তবেই হস্তক্ষেপ করেছি।'
এরপরই রাজ্যপালের ফোনের প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশ সুপার অনরনাথকে উদ্দেশ্য করে জানতে চান, 'তোমায় কী রাজ্যপাল ফোন করে? বলে এটা করবে না-ওটা করবে না। তোমার উপর কী রাজনৈতিক চাপ রয়েছে। ভয় পাচ্ছো কাজ করতে? অবশ্য ফোন করলেও (রাজ্যপাল) তুমি আমায় বলবে না জানি। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। রাজনৈতিক চাপে ভয় পেলে আমাকে সরাসরি জানিও। মনে রাখবে তুমি রাজ্য সরকারের কাজ করছো।'
মমতার সাফ কথা, 'তুমি ভাল করে কাজ করবে বলেই আমি ওখানে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি হলদিয়েতেও কমপ্লেন পেলাম। তাই দু'জনকে গ্রেফতার করতে হল। কারণ এক্সসাইড ইন্ড্রাসটি ও ধনুকারা কমপ্লেন করেছিল।'
জবাবে অবশ্য পূর্ব-মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে জানান, তাঁর উপর কোনও রাজনৈতিক চাপ নেই, ভয়ও তিনি পাচ্ছেন না।
পূর্ব মেদিনীপুর অধিকারীদের গড় বলে পরিচিত। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খাস তালুক এই জেলা। নন্দীগ্রেমর বিধায়কও তিনি। এই জেলার বেশ কয়েকটি বিধানসভা কেন্দ্র একুশের ভোটেওপদ্ম শিবিরের দখলে। ফলে ওই জেলার পুলিশ সুপারকে প্রশাসনিক বৈঠকে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা অত্যন্ত তাৎপর্যবাহী ও ইঙ্গিতবহ বলেই মনে করা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের ভর্ৎসনা প্রসঙ্গে, বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, 'উনি আসলে প্রশানসনের কাঠামোকে মানেন না। তাই পুলিশ সুপারকে প্রকাশ্যে বলছেন। আসলে পুলিশকে কে যে তৃণমূলের দলদাস হতে হবে ঘুরিয়ে সেই কথাই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।' সিপিআইএম নেতা শমীক লাহিড়ীর কথায়, 'বাংলায় তৃণমূল আমলে প্রশান বলে কিছু নেই। প্রকাশ্যে বকলেন, কিন্তু আসলে বললেন যে শাসকের পক্ষে কথা না বললেই বিপদ হবে।'