লক্ষ্মীবারে জোড়া ধাক্কা মমতার। একইদিনে দল ছাড়লেন শুভেন্দু অধিকারী ও জিতেন্দ্র তিওয়ারি। এদিন দুপুরেই দলনেত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শুভেন্দু। তার কিছুক্ষণ পরই আসানসোল পুরনিগমের প্রশাসক পদ থেকে ইস্তফা দেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। উত্তরবঙ্গ থেকে ফোন করে মমতা তাঁকে শান্ত হতে বলেছিলেন। কিন্তু কথা শুনলেন না জিতেন্দ্র। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই দলও ছাড়লেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক। অভিযোগ, তিনি প্রশাসকের পদ ছাড়তেই তাঁর পার্টি অফিসে হামলা চালানো হয়েছে। বলেন, "প্রশাসক পদে ইস্তফা দেওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যেই আমার বিধায়ক কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। তাই তৃণমূল ছাড়তে বাধ্য হলাম। দলের সঙ্গে আমার আর কোনও সম্পর্ক নেই।"
যেন সিনেমার চিত্রনাট্যর মতো। আগে থেকেই সব ঠিক করা ছিল। বুধবার বিধায়ক পদে থেকে প্রথমে ইস্তফা দেন শুভেন্দু। বিধানসভায় গিয়ে স্পিকারের সচিবের কাছে গিয়ে পদত্যাগ পত্র দিয়ে আসেন তিনি। এরপর সন্ধেবেলা তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ সাংসদ সুনীল মণ্ডলের বাড়িতে বৈঠকে করেন শুভেন্দু-জিতেন্দ্র ও মমতার ভরসার কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরি। এরপর নাটকের শেষ অঙ্ক শুরু হয় বৃহস্পতিবার দুপুরে। মমতাকে চিঠি পাঠিয়ে প্রথমে দলত্যাগ শুভেন্দুর। তার কিছুক্ষণ পর আসানসোল পুরনিগমের অফিসে গিয়ে সহকর্মীদের কাছে আবেগ জড়ানো ভাষণ দিয়ে প্রশাসকের পদ ছাড়েন জিতেন্দ্র। ইতিমধ্যেই মমতাকে চিঠি পাঠিয়ে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান-সহ সব সরকারি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়ে দেন কর্নেল দীপ্তাংশু।
আরও পড়ুন “শুভেন্দু কেন, আমি ছাড়লেও দলের কিছু ক্ষতি হবে না”
এক ঘণ্টা পর পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি ও তৃণমূলের সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন জিতেন্দ্র। অভিযোগ তোলেন, পদ ছাড়তেই পাণ্ডবেশ্বরে তাঁর বিধায়কের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নাটকের যবনিকা পড়বে হয়তো শনিবার। সেদিন মেদিনীপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাত ধরে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করতে চলেছেন শুভেন্দু। সেই যোগদানের মঞ্চে সম্ভবত জিতেন্দ্র-দীপ্তাংশু-সুনীল মণ্ডল সহ বহু চেনা মুখকে দেখা যেতে পারে। দল ছাড়তেনই, শুধু বৃহস্পতিবার একটু রাজ্য রাজনীতির হাওয়া গরম করলেন শুভেন্দু-জিতেন্দ্র-দীপ্তাংশুরা।
আরও পড়ুন মমতার ফোনেও ‘শান্ত’ হলেন না, মুখ্য প্রশাসক পদ থেকে ইস্তফা জিতেন্দ্রর
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন