নন্দীগ্রামে দুর্ঘটনায় আহত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই ঘটনাকে একদমই লঘুভাবে দেখছে না নির্বাচন কমিশন। কড়া পথে হেঁটে সাসাপেন্ড কড়া হল পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশকে। তাঁর জায়গায় দায়িত্বে এলেন সুনীল যাদব। অন্যদিকে সান্সপেন্ড কড়া হয়েছে রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা বিবেক সহায়কে। কাল দুপুরের মধ্যে নতুন নিরাপত্তা উপদেষ্টার নাম ঘোষণা। বিবেকের বিরুদ্ধে ৭ দিনের মধ্যে চার্জ গঠন করে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছে কমিশনকে। মুখ্য সচিবকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অপসারিত পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসক বিভু গোয়েল। তাঁর জায়গায় দায়িত্বে এলেন স্মিতা পান্ডে। এদিকে, আরও কয়েকজন নিরাপত্তা আধিকারিক কমিশনের নজরে। তাঁদের একটা নামের তালিকা তৈরি করে ৩ দিনের মধ্যে কমিশনকে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্য সচিব এবং ডিজি সেই তালিকা তৈরি করবেন।
এই ঘটনায় 17 মার্চের মধ্যে নতুন পুলিশ সুপার ও জেলাশাসক নিয়োগের নির্দেশ কমিশনের। বিভাগীয় তদন্ত করতে মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিব কে নিয়ে 5 জনের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের। এদিকে, চক্রান্ত করে পরিকল্পিত হামলা নয়, নিছক দুর্ঘটনা। নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর আঘাত পাওয়ার বিষয়টিকে কমিশনের কাছে এভাবেই রিপোর্টে তুলে ধরেছেন রাজ্যের দুই বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক ও বিবেক দুবে।
নন্দীগ্রামে ভোটপ্রচারে গিয়ে জখম হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছে তৃণমূল। কমিশনকেও নিশানা করে হয়েছিল। ঘটনায় মুখ্যসচিব ও সিইও-র কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি দুই বিশেষ পর্যবেক্ষককে নিজেদের মতামত জানানোর কথাও বলা হয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতেই অজয় নায়েক ও বিবেক দুবে কমিশনকে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছেন নন্দীগ্রামের ঘটনা দুর্ঘটনা ছাড়া কিছু নয়।
গত বুধধবার ভোটে রাজ্যের দুই বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক ও বিবেক দুবে নন্দীগ্রামে গিয়ে ঘটনাস্থল সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন বলে জানা গিয়েছে।
কমিশনকে দুই পর্যবেক্ষকের দেওয়া ‘দুর্ঘটনা’র রিপোর্ট মানতে রাজি নয় তৃণমূল। সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘দুই বিশেষ পর্যবেক্ষকের রিপোর্টে আমরা সবমত নই। এত দ্রুত সব দেখে রিপোরট দেওয়া হল কেমন করে? আমরা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চাইছি।’
এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘বোধাই যাচ্ছিল মুখ্যমন্ত্রীর আঘাত হওয়ার বিষয়টি দুর্ঘটনা। কিন্তু ভোটের আগে ওরা (তৃণমূল) সেটা মানতে চাইছিল না। এখন সব স্পষ্ট হয়ে গেল। ভোধা গেল ওদের আত্মবিশ্বাস তলানীতে।’
গত বুধবার নন্দীগ্রামে প্রচারে গিয়ে পায়ে চোট পান মমতা। মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ তুলেছিলেন, গাড়ির সামনে ভিড়ের চাপে তাঁকে কেউ বা কারা ধাক্কা দেওয়ার ফলেই তাঁর পায়ে লেগেছে। প্রায় একই অভিযোগের সুর শোনা গিয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্বের গলায়।