বঙ্গ বিজয়ের লক্ষ্য়ে কোনও ভুল-ত্রুটি করতে চায় না বিজেপি। একুশের নির্বাচনের আগে তাই দলের মধ্যে ফাটল ঢাকতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। ভোট এগিয়ে আসতেই দলে আদি বনাম নব্যের লড়াই প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে। তার জেরে মাথা-ব্যথা বাড়ছে গেরুয়া শিবিরের। এবার সেই দ্বন্দ্ব ঠেকাতে হাইকমান্ড হস্তক্ষেপ করেছে। শুক্রবার দিল্লিতে নিজের বাসভবনে ডেকে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সমন্বয়ের যেন কোনও অভাব না হয়। বঙ্গ বিজয়ের লক্ষ্যে আটজনের একটি কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে। কমিটিতে রাখা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে। যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই আলাদা খাতির পাচ্ছেন দলে। জুট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার শীর্ষ পদ, হেস্টিংসের অফিসে আলাদা ঘর, জেড ক্যাটাগরি নিরাপত্তা, আর এবার অমিত শাহের তৈরি করা কমিটিতে উল্লেখযোগ্য মুখ হিসাবে ঢুকলেন শুভেন্দু। কমিটিতে আরও রয়েছেন, শিবপ্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, অমিতাভ চক্রবর্তী এবং দিলীপ ঘোষ। অমিত শাহও নিজে রয়েছেন কমিটিতে। কমিটির মাথায় বসানো হয়েছে সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। ঠিক হয়েছে, কমিটির সদস্যরা নিয়মিত বৈঠক করবেন। বৈঠকের রিপোর্ট শাহ-নাড্ডাকে পাঠাতে হবে।
আরও পড়ুন শিয়রে ভোট, ‘পরিবর্তনে’র প্রচারে বাংলায় ফের রথযাত্রার ভাবনা বিজেপির
বেশ কয়েকদিন ধরে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখা যাচ্ছিল। কখনও দিলীপের কর্মসূচিতে নেই শুভেন্দু, বা কিছুক্ষণ থেকে চলে গেলেন, আবার দিলীপের অপেক্ষায় থেকে থেকে বিরক্ত হয়ে চলে গেছেন মুকুল। আবার এঁদের কর্মসূচিতে নেই দিলীপ। বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো একেক জন নেতা আচরণ করছিলেন। সেই খবর কানে যায় দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরও। শিবপ্রকাশ-দিলীপ শিবির, মুকুল-কৈলাস শিবির আবার অন্যদিকে, স্বপন দাশগুপ্ত-রন্তিদেবদের একটা আলাদা শিবির তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন ‘ভ্যাকসিন চোর’, তৃণমূলকে তুলোধনা কৈলাসের
সমন্বয়ের অভাব নিয়ে মুকুলের একটা অসন্তোষ ছিলই। সবকিছু নিয়ে তিনি অমিত শাহকে অভিযোগ জানাতে চাইছিলেন। ফোন করে সাক্ষাতের আবদারও করেন। এরপর ১৪ জানুয়ারি শাহের অফিস থেকে ফোন করে জানানো হয়, সবাইকে নিয়েই বৈঠক হবে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য ভাবে শুভেন্দুকে জানায়নি দলের কোনও নেতা। ওইদিন শুভেন্দুকে ছাড়াই বৈঠক হয়। কিন্তু তার আগে শাহের অফিস থেকে জানতে চাওয়া হয় শুভেন্দুকে ডাকা হয়েছে কি না। এতেই স্পষ্ট শুভেন্দুকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন শাহ, কিন্তু দিলীপ-মুকুলরা বুঝছেন কই!