বিজেপির তৃতীয় ও চতুর্থ দফার প্রার্থী ঘোষণা হতেই দিকে দিকে বিক্ষোভ শুরু কর্মী-সমর্থকদের। আলিপুরদুয়ারে বিজেপির জেলা সভাপতি সংবাদমাধ্যমের সামনেই সেই আসনের প্রার্থীকে চিনতেই অস্বীকার করেন। তিনি প্রকাশ্যে আলিপুরদুয়ার আর কালচিনির বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে আপত্তি তোলেন। দলীয় কার্যালয়ে বসে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, প্রার্থী চূড়ান্ত করার আগে কেউ তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেনি। এদিকে, প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আলিপুরদুয়ারের প্রার্থী হিসেবে অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ীর নাম ঘোষণা করে। এমনকি, অত্যন্ত পরিচিত ও বিজ্ঞ মুখ বলে দাবি করে তাঁরা। কিন্তু জেলা সভাপতির মুখে উলটো সুর। অশোক লাহিড়ীকে চেনেন না জেলা সভাপতি এমনটাই জানান ওই বিজেপি নেতা।
পাশাপাশি কালচিনির প্রার্থীর বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন তিনি। তাঁর মন্তব্য, ‘একজন দু’দিন আগে মোর্চা থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়ে কীভাবে প্রার্থী হয়ে গেলেন।‘ উত্তরে যখন তীব্র দ্বন্দ্ব, তখন দক্ষিণেও গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ সামনে এল। সিঙ্গুরের বিজেপি প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে প্রার্থী হিসেবে মানবেন না। এই দাবিতে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষককে ঘেরাও করেন বিক্ষুব্ধ বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা।
এদিকে, হাওড়া দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থী নিজেই বিড়ম্বনা বাড়ালেন দলের। হাওড়া দক্ষিণ কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে সাংবাদিক রত্নিদেব সেনগুপ্তর নাম ঘোষণা করে বিজেপি। তারপরই গেরুয়া শিবিরের বিড়ম্বনার শুরু। প্রার্থী হতে চান না বলে বেঁকে বসেছেন স্বয়ং রত্নিদেববাবু। প্রার্থী হতে রাজি নন বলে দলকে তিনি জানাবেন বলে দাবি করেছেন বিজেপি প্রার্থী। ওই কেন্দ্রে দলকে আরও ভালো প্রার্থী দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
আসন পছন্দ না হওয়াতেই কী প্রার্থী হতে চাইছেন না রন্তিদেববাবু? বিজেপি প্রার্থীর দাবি, আসন নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। বা দলের সিদ্ধান্ত নিয়েও তাঁর কিছু বলার নেই। তবে, এবার ভোটে কোনও কেন্দ্রেই প্রার্থী হয়ে নির্বাচনীলড়াইয়ে নামতে চান না বলে দাবি করেছেন রত্নিদেব সেনগুপ্ত। যদিও ভোটে না লড়তে চাইলেও বিজেপি সংগঠন ও অন্যান্য সব প্রার্থীদের হয়ে নির্বাচনী প্রচার করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
দলের বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই বলে একাধিকবার স্পষ্ট করতে চেয়েছেন হাওড়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। রত্নিদেব সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘দলের বিরুদ্ধে আমার কোনও অসন্তোষ নেই। কিন্তু প্রার্থী করার বিষয়ে আমাকে আগে কিছু জানানো হয়নি। জানলে দলকে বলতাম প্রার্থী হিসাবে আমাকে না রাখতে। আমি আপাতত জনপ্রতিনিধি হতে চাই না। দলীয় সংগঠনের কাজ, প্রার্তীদের হয়ে প্রচার করতেই আগ্রহী।’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে হাওড়া কেন্দ্র থেকে পদ্ম চিহ্নে তৃণমূলের প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচনী লড়াই করেছিলেন রত্নিদেব সেনগুপ্ত। ভোট অবশ্য পরাজিত হন তিনি। একুশের ভোট দল তাঁর উপর আস্থা রাখলেও অবশ্য তিনি প্রার্থী হতে নারাজ।