হাথরাস কাণ্ডে উত্তাল দেশ। সেই ইস্যুকে হাতিয়ার করে শনিবার কলকাতার রাজপথে প্রতিবাদ মিছিলে হাঁটলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা কালে দীর্ঘদিন পর পথে প্রতিবাদে মমতা। যা ঘিরে সরগরম বাংলার রাজনৈতিক মহল। এদিন বিড়লা প্লানেটোরিয়াম থেকে গান্ধীমূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত মিছিলে হাঁটেন মুখ্যমন্ত্রী। সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে কোভিড প্রোটোকল মেনে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা হয় মিছিলে। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন মমতা। এক হাতে টর্চ এবং আরেক হাতে কালো পতাকা নিয়ে হাঁটেন মমতা। এরপর গান্ধীমূর্তির পাদদেশে মঞ্চে উঠে তীব্র শ্লেষে বিজেপিক কোণঠাসা করেন তিনি। গেরুয়া শিবিরকে নিশানা সেধে বলেন, "দেশে স্বৈরাচারী শাসন চলছে। স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে বিজেপি। সাংবাদিকদের ফোন করে ভয় দেখাচ্ছে। হাথরাসের ঘটনা প্রচার না করার জন্য হুমকি দিচ্ছে।"
এদিন আদিবাসী-দলিত নির্যাতন নিয়ে বিজেপিকে অলআউট আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, "আজ হাতে টর্চ নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যেভাবে যোগী সরকারের উত্তরপ্রদেশে আদিবাসী-দলিত মা বোনদের উপর অত্যাচার হচ্ছে তার জন্য এই টর্চের মাধ্যমে নির্যাতিতাদের অন্ধকার থেকে আলোর দিকে নিয়ে আসব।" কোভিড মোকাবিলায় কেন্দ্র সরকারকে পুরোপুরি ব্যর্থ তোপ দগে তিনি বলেন, "বিজেপি সবথেকে বড় প্যানডেমিক। এদের স্বৈরতন্ত্রকে জব্দ করার জন্য সবরকম কসরত হবে। বিজেপি পার্টি কী ভাবে, নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে দেবে না আমাদের? আজ দেবে না, কাল দেবে না, পরশু দেবে না, কিন্তু একদিন না একদিন তো দেবেই। কতদিন বাধা দেবে?"
আরও পড়ুন বাংলায় ভোটের গন্ধ: আনলকে রাজনৈতিক সংঘর্ষে নিহত ১২
এদিন প্রতিবাদ মঞ্চ থেকে যোগী প্রশাসনকে তীব্র আক্রমণ করে মমতা বলেন, "লজ্জা হওয়া উচিত যোগী সরকারের। মা-বোনদের নির্যাতন থেকে বাঁচাতে পারেন না, আবার নির্যাতিতার পরিবারকে ভয় দেখাচ্ছেন, সাংবাদিকদের হুমকি দিচ্ছেন। যেন ওরাই দোষী! আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত।" এদিন তিনি হাথরাসে দলিত তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যে লাগাতার আন্দোলনের রূপরেখা বেঁধে দেন মমতা। কর্মী-সমর্থক, নেতৃত্বকে বলেন, আগামিকাল থেকে রাজ্যের ব্লকে ব্লকে পোস্টার নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করার নির্দেশ দেন মমতা। মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস, বঙ্গজননী, সংখ্যালঘু সেল-সহ সমস্ত কর্মী-সমর্থকদের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিবাদ আন্দোলনে নামতে বলেন। পুজোর শুরু পর্যন্ত এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে বলেন তিনি। অতিমারীর জেরে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শেষে তিনি বলেন, "বিজেপিকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভয় পেলে লড়াই করা যাবে না। বিজেপি টেম্পোরারি।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন