বঙ্গে ভোটের মুখে একটা বড় ইস্যু যেমন আইনশৃঙ্খলা, দুর্নীতি, গরু-কয়লা পাচার, তেমনই একটা বড় ইস্যু সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। ২০১৯ লোকসভা ভোটে নাগরিকত্ব ইস্যুতে রাজ্যের উদ্বাস্তু-মতুয়া অধ্যুষিত অঞ্চলে ব্যাপক প্রচার করেছিল বিজেপি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে নাগরিকত্বের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার ফলও পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। মতুয়ারা দুহাত উজাড় করে ভোট দিয়েছিলেন পদ্মশিবিরকে। কিন্তু আইন পাশের পর দেড় বছর হয়ে গেলেও তা কার্যকর হয়নি। একুশের ভোটের মুখে তা ধোঁয়াশা রয়েছে। শনিবার সেই ধোঁয়াশা আরও বাড়ালেন জে পি নাড্ডা।
এদিন বর্ধমানে একগুচ্ছ কর্মসূচি করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। মন্দিরে পুজো, কৃষকদের বাড়িতে মুষ্টিভিক্ষা, তারপর পাত পেড়ে মধ্যাহ্নভোজন, বিকেলে বিশাল রোড শো এবং শেষে সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দেন নাড্ডা। রাতে সাংবাদিক সম্মেলনে ফের একপ্রস্ত কাটমানি, দুর্নীতি নিয়ে মমতা সরকারকে তোপ দাগেন তিনি। জানান, যা পরিস্থিতি তা দেখে তাঁর মত, বিজেপি ২০০ আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসবে রাজ্যে। এরপর তাঁকে সিএএ কার্যকর নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। জানতে চাওয়া হয় কবে কার্যকর হবে নাগরিকত্ব আইন। তার উত্তরে নাড্ডা বলেন, "বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক উত্তর দিতে পারবে। সিএএ কার্যকর নিয়ে আমি বলতে পারি, আমরা এর প্রতি দায়বদ্ধ।"
আরও পড়ুন বর্ধমানে নাড্ডার রোড-শো, বিপুল মানুষের ঢল
প্রসঙ্গত, রাজ্যে ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্র মতুয়া সম্প্রদায় প্রভাবিত। আর এই ৩০টি আসনের ফলাফলের উপর অনেক পট পরিবর্তন অপেক্ষা করছে। ইতিমধ্যেই কিছুদিন আগে সিএএ কার্যকর না হওয়ায় বেসুরো গাইছিলেন বনগাঁর সাংসদ তথা মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। কিন্তু পরে তিনি বলেন, সিএএ কার্যকর হওয়া নিয়ে কেন্দ্রের উপর ভরসা রয়েছে তাঁর। এমনকী তাঁর দাবি মতো, বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৈরি করে শান্তনুর পছন্দের লোককে সভাপতিও করে বিজেপি। আগামী ৩০ জানুয়ারি ঠাকুরবাড়িতে আসার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তখনই মতুয়াদের ক্ষতে প্রলেপ দিতে পারেন তিনি। কিন্তু ঠাকুরবাড়ি এখন দ্বিধাবিভক্ত। নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হতে দেরি হলে 'অস্থির' মতুয়াদের মন বদলাতে দেরি হবে না, বলছেন বিশ্লেষকরা।