তাঁর জেলা বীরভূমে ১১টি বিধানসভা আসন। সেই আসনের মধ্যে বেলা একটা অবধি ট্রেন্ডে ৭টি আসনে এগিয়ে তৃণমূল। ৪টিতে এগিয়ে বিজেপি। এখনও পর্যন্ত এই ১১টি আসনেই অনেক রাউন্ড গণনা বাকি। কিন্তু সার্বিক ট্রেন্ড বলছে, দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে হ্যাট্রিকের পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস। ফলে, রাজ্য রাজনীতির অনেকটা লাইমলাইট গণনার দিন আবর্তিত ছিল বীরভূম তৃণমূল জেলা সভাপতির ওপর। ভোটের দু’দিন আগে এবং একদিন পর পর্যন্ত কমিশনের করা নজরদারিতে ছিলেন বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি।
আর সেই নজরদারিও থামাতে পারেনি লাল মাটির দেশে অনুব্রতর ‘খেলা’। ফল প্রকাশের দিন দুপুরে সেই আত্মবিশ্বাসের সুর শোনা গেল অনুব্রতর গলায়। এদিন জেলা অফিসে দাঁড়িয়ে দৃপ্ত কণ্ঠে অনুব্রত বলেন, আমি অনুব্রত মণ্ডল। মায়ের দুধ খেয়ে বড় হয়েছি, আমাকে আটকানো মুশকিল, আবার খেলা হবে।‘ তাঁর মন্তব্য, ‘আমাকে দু’বার চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। বিজেপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অপমান করেছিল। বাংলার মহিলারা সেই অপমান মেনে নেননি। বাংলার মহিলারা, বাংলার মানুষ জবাব দিয়েছে। আর আমাদের নেত্রী খেলা জানেন, তাঁর কোচিংয়ে আমরা খেলেছি।‘
এদিকে, বাংলায় তৃণমূলের বিরাট জয়ের সম্ভাবনার দিনেও ভ্রুকুটি দলীয় সমর্থকদের বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস। কোভিডের বাড়বাড়ন্ত। কিন্তু, রবিবার বেলা বাড়তেই সেই নিষেধাজ্ঞকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে উচ্ছ্বাসে মেতেছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। বেড়েছে উদ্বেগ। উধাও কোভিড বিধি। আর এতেই ক্ষুব্ধ কমিশন।
কঠোর নিয়ন্ত্রণ জারির জন্য ইতিমধ্যেই কমিশনের রাজ্যের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্দেশ দিয়েছে। কেন বিধি পালন হচ্ছে না তা দেখার কথা জানিয়েছে। এরপরই প্রশানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিধি ঠিক মতো বলবৎ হচ্ছে কিনা তা দেখার দায়িত্বে যেসব সরকারি অফিসার ও কর্মীরা রয়েছেন প্রয়োজনে তাঁদের সাসপেন্ডের কথাও বলে হয়েছে।
বাংলার মানুষ ফের তৃণমূলের পক্ষেই রায় দিয়েছে। ভোটের ট্রেন্ডেই তার ইঙ্গিত স্পষ্ট। ২০০ আসনে এগিয়ে রয়েচে জোড়া-ফুল শিবির। আর এতেই উচ্ছ্বাস, উন্মাদনায় বুঁদ তৃণমূলের সৈনিকরা। সবুজ আবীর, তেরঙ্কা পতাকা হাতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন তাঁরা। অনেকেরই মুখে নেই মাস্ক, সামাজিক দূরত্ববিধি তো দূরঅস্ত। এই উচ্ছ্বাসের জেরেই বিপদ আরও বাড়তে পারে বলে আশহ্কা বিশেষজ্ঞদের। তাই তড়িঘড়ি কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে কমিশন।