বাম-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে আব্বাস সিদ্দিকির দলের সমঝোতা প্রশ্নে তৈরি হল জটিলতা। ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা গত মাসে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ নামে একটি দল গঠন করেছেন। সেই দলকে বাম-কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষ দলে শামিল করতে তৎপর সূর্যকান্ত মিশ্র-অধীর চৌধুরীরা। কিন্তু এআইএমআইএম বা মিমকে ছাড়া জোট সমঝোতায় যেতে নারাজ পীরজাদা। এদিকে, আবার আদর্শগত ভাবে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দলকে ধর্মনিরপক্ষে জোটে শামিল করতে নারাজ বাম-কংগ্রেস। ফলে বিধানসভা ভোটের আগে বিরোধী জোট জটে ফায়দা লুটতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস।
গত ২১ জানুয়ারি ‘ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট’ ঘোষণা করার পর আসন্ন নির্বাচনে আব্বাসের সঙ্গে জোটের কথা বলতে গত ৩ জানুয়ারি ফুরফরা শরিফ আসেন মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। এদিকে, আব্বাসউদ্দিনকে ধর্মনিরপেক্ষ জোটে টানতে সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লেখেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস বিধায়ক আবদুল মান্নান। সবুজ সংকেত দিয়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ডও।
তবে মিম-কে রেখে জোটে আপত্তি রয়েছে বাম-কংগ্রেসের। বাম বিধায়ক আলি ইমরান রামজের কথায়, ‘‘আসাদউদ্দিনের দল মিমের সঙ্গে নীতিগত কারণে আমরা জোট করতে পারব না। এই দলের ইতিহাস জানলে দেখা যাবে, দেশ বিভাজনের সময় হায়দরাবাদের নিজাম এই দলটি তৈরি করেছিলেন পাকিস্তানে যুক্ত হওয়ার জন্য। দলটি তৈরি হয়েছিল কিছু মানুষকে উজ্জীবিত করে হায়দরাবাদকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানে যুক্ত হওয়ার জন্য। শেষে ভারত সরকারের চাপে তাঁরা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেনি। বাংলায় এই দলটির নাম ব্যাখ্যা করলে দেখা যাবে, এই দলটি মুসলিম সম্প্রদায়ের স্বার্থরক্ষার কথা বলে। অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের অর্থ মুসলিম ঐক্য ও অধিকার রক্ষা। কিন্তু আমরা ভারতের মানুষের অধিকার রক্ষায় রাজনীতি করি। সকলকে নিয়ে আমরা চলতে চাই।’’
এদিকে, আবার মিমকে বিজেপির বি-টিম বলে আক্রমণ দেখা শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই মিমকে ধর্মনিরপেক্ষ জোটে রাখলে সেটা ব্যুমেরাং হয়ে ফিরতে পারে। এই আশঙ্কাই করছেন বাম ও কংগ্রেস শিবির।
কিন্তু এই বিষয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন কৌশল নিয়ে চলছে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। ফ্রন্টের চেয়ারম্যান নৌসাদ সিদ্দিকি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘বাম-কংগ্রেস তাদের অবস্থানের কথা বলছে। ভারতীয় রাজনীতির অতীত ইতিহাসে দেখা যাবে, কংগ্রেসও এমন দলের সঙ্গে জোট করেছে, যাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার অভিযোগ ছিল। এখন তো মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস আবার শিবসেনার হাত ধরে সরকার গড়েছে। সিপিএমের সঙ্গেও তো মুসলিম লিগের সঙ্গে অন্য রাজ্যে জোট রয়েছে।’’