রবিবার হুগলির পুরশুড়ার সভা থেকে বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি দাবি করেন, ‘নিজে না সরলে তাঁকে সরানো অত সহজ নয়।‘ তাঁর কটাক্ষ, ‘বিজেপি ভারতের জঘন্য রাজনৈতিক দল। তাদের একটাই কাজ, রোজ রোজ মিথ্যা কথা বলা, কুৎসা করা। দেশে এরকম সরকার আগে কখনও দেখা যায়নি। এ রকম বাজে রাজনৈতিক দল দেখিনি। যারা ক্ষমতায় থেকে মানুষকে খুন করে।‘
দিল্লি থেকে উত্তরপ্রদেশে এনসিআর-এর নামে বিজেপি ‘মানুষ খুন করেছে’ বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি।বিজেপি-র স্লোগান ‘আসল পরিবর্তন’ নিয়েও কটাক্ষ করেছেন মমতা। তৃণমূলের জমানায় বাংলায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। এই অভিযোগ বিভিন্ন জনসভা থেকে বারংবার তুলেছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। খোদ প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখেও এ কথা শোনা গিয়েছে। সেই উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনেই বিজেপি-কে তুলোধোনা করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, “বিজেপি বলছে বাংলায় নাকি উন্নয়ন হয়নি। তাই বাংলায় নাকি পরিবর্তন দরকার। আমি বলি, পরিবর্তন স্লোগানটা আমারই।” এর পরই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘আমি যত দিন নিজে না যাচ্ছি, আমাকে সরানো অত সহজ নয়, এটা জেনে রেখো বিজেপি দল।‘ নরেন্দ্র মোদীকে ‘বাজে প্রধানমন্ত্রী’ এবং অমিত শাহকে ‘বাজে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’ বলেও আক্রমণ করেছেন মমতা।
তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘তোমরা যদি মনে করো গুজরাত বাংলা শাসন করবে, সেটা হতে দেব না। বাংলা বাংলাকেই শাসন করবে।” বিজপি-র বিরুদ্ধে ভোটে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমার সরকার কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, পথশ্রী, কর্মশ্রী করেছে। কিন্তু বিজেপি মানুষ খুন করেছে।’
এদিকে, শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুসলিম ভোট বিভক্ত হতে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে হিন্দুদের বিজেপির “সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ চালানোর” প্রয়াসের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে বলেছেন।
আসাদউদ্দিন ওয়াইসির নেতৃত্বাধীন এআইএমআইএম এবং আব্বাস সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আইএসএফের নাম না দিয়েই মমতা দাবি করেছিলেন যে গেরুয়া দল পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করতে দুই মুসলিম নেতার সঙ্গে জড়িত।
শনিবার হুগলির তারকেশ্বরে এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার রায়দিঘি ও কুলপিতে জনসভা করেন মমতা। সেখান থেকেই বিজেপির হিন্দুত্ব নিয়ে সুর চড়ান তৃণমূল সুপ্রিমো। উপস্থিত জনগণকে তিনি বলেন যে, বিজেপির হিন্দুত্বর বিরুদ্ধে লড়াই করবে বাংলার হিন্দুরাই। তিনি বলেন,”দয়া করে কাউকে আপনার ভোট ভাগ করতে দেবেন না। আমাদের অবশ্যই ২০০র বেশি আসন জিততে হবে।”
মমতার কথায়, “প্রতিদিন বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় চণ্ডীপাঠ করি। আমি প্রতিটি ধর্মকে সম্মান জানাই। আমি একজন ব্রাহ্মণ। যদিও আমার বাড়িতে রান্না করেন একজন তফশিলি মহিলা। আমার সব যত্ন নেন। তিনি প্রতিদিন আমার জন্য খাবার রান্না করেন।‘