নন্দীগ্রামে আমরাই জিতবো মা-মাটি-মানুষের আশীর্বাদে। বয়ালের ৭ নম্বর বুথ থেকে বেরিয়ে দাবি করলেন মমতা। তিনি অভিযোগ করেন, 'নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী কাল রাত থেকে অসভ্যতামি করছে। আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের ভয় দেখাচ্ছে। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে হুমকি দিয়েছে।' তিনি প্রত্যয়ের সুরে বলেন, ‘যতই কারচুপি হোক জিতব আমিই’
আর কী বললেন তিনি?
- নন্দীগ্রাম নিয়ে চিন্তিত নই।আমি চিন্তিত গণতন্ত্র নিয়ে
- কেন্দ্রীয় বাহিনী আমাদের বন্ধু, ওদের কিছু বলবো না
- কয়েক জায়গায় ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে, বয়ালে চিটিংবাজি হয়েছ
- কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নির্দেশ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ, বিজেপির হয়ে ভোট করাতে নির্দেশ
- নন্দীগ্রামে ৯০% ভোট পেয়েছে তৃণমূল
- গোটা বিষয়ে কমিশনের নীরবতা দেখে আমি স্তম্ভিত
- নির্বাচন কমিশনের একপেশে মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী
পাশাপাশি এদিন ভোটগ্রহণের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ভোট প্রচার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এর আগে নন্দীগ্রামের বয়ালের বুথে অশান্তি নিয়ে রাজ্যপালকে ফোনে অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সে সময় বলেছিলেন, ‘সকাল থেকে কাউকে ভোট দিতে দেয়নি। ৬৩টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ৮০% ছাপ্পা ভোট হয়েছে। ব্যবস্থা নেয়নি কমিশন। আমরা আদালতে যাব।‘ তাঁর আরও অভিযোগ ছিল, ‘বহিরাগতদের নিয়ে এলাকায় অশান্তি ছড়ানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে এই কাজ হয়েছে।’ এদিন প্রায় দুই ঘণ্টার মতো বয়ালের সেই বুথে বসেছিলেন মমতা। বাইরে যুযুধান তৃণমূল ও বিজেপি। মারমুখী দুই পক্ষ, একে অপরকে হুমকি, ইটবৃষ্টি। পরিস্থিতি আয়ত্বে আনতে দুই দলের সমর্থকদের মাঝে মোতায়েন করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী।
তারপর বয়ালের ৭ নম্বর বুথ থেকে অবশেষে বাইরে বের করা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বাইরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় নন্দীগ্রামের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠির নেতৃত্বে বাহিনী ওই এলাকায় যায়। তাঁর সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, ‘বুথের ১০০-২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি। তারপরেই কী করে এত জমায়েত? লাঠি, ইট হাতে মানুষ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে?’ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন শুনে তাঁকে আশ্বাস দেন ওই আইপিএস। এরপর এলাকায় নিরাপত্তা বাড়িয়ে তাঁকে বের করে আনা হয় ওই স্কুল থেকে।
অপরদিকে, মমতার ফোন পেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়ে ট্যুইট রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের। তিনি লেখেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ গুরুত্ব-সহ বিচার করা হয়েছে। আইনের মধ্যে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। আমার আশা গণতন্ত্র রক্ষায় সবপক্ষই ইতিবাচক ভূমিকা নেবে।’
প্রথমেই বয়ালে শংকরবেতার গ্রামের সাত নম্বর বুথে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে এরপর ওই এলাকার গ্রামে ঢুকে পড়েন তিনি। কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট দিতে বাধা দিচ্ছে, মারধর করছে বলে তাঁকে জানান স্থানীয় ভোটাররা। মমতার কাছে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান সকলে। এর মাঝেই বয়ালে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে বিজেপি কর্মীরা ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে শুরু করেন।
সবাই যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন তা নিশ্চিত করার জন্য কমিশনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিৃধানসভা ঙোক বা লোকসভা নির্বাচন সব ক্ষেত্রেই বরাবর ঘরে বসে ভোটদানে নজর রাখতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেত্রীকে। একবারই বিকেলের দিকে বেড়িয়ে ভোট দান করতে যেতেন তিনি। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। তাই মমতাকেও দেখা গেল ব্যতিক্রমী ভূমিকায়।