বোলপুরে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের জমি সংক্রান্ত বিতর্ক নিয়ে বিজেপিকে তুলোধোনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। শান্তিনিকেতনে নাকি সরকারি জমি জোর করে ধরে রেখেছেন নোবেলজয়ী বাঙালি। সেই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই বিজেপি তা নিয়ে সরব হয়েছে। মমতাকে এদিন সেই প্রশ্ন করা হলে তিনি রেগে গিয়ে বলেন, "আমি অমর্ত্য সেনকে সম্মান করি। সারা বিশ্ব সম্মান করে। আমাদের নোবেল পুরস্কার এনে দিয়েছেন। বাংলার গর্বকে বিশ্ব শিখরে নিয়ে গেছেন, আপনারা বিশ্বাস করেন যে অমর্ত্য সেন এমন হবে যে উনি শান্তিনিকেতনে জমি দখল করে বসে থাকবেন?"
এরপরেই মমতা বলেন, "আমি যতটুকু জানি, ওনার পরিবার এখানে আছেন প্রায় ৭০-৮০ বছর। যাঁরা এসব বলছেন, তাঁরা ওনার সম্পর্কে কতটুকু জানেন? অমর্ত্য সেন বিজেপির বিরুদ্ধে। তাই তিনি জমি দখল করে আছেন, হকার বসিয়েছেন, তাঁর প্রতীচী বাড়ি নিয়ে যা ইচ্ছা বলে যাবে তা বাংলার মানুষ বরদাস্ত করবে না। আমি বাংলার মানুষের হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি যতদূর জানি, অমর্ত্য সেনের পরিবারই রবীন্দ্রনাথকে বোলপুরে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমাদের দুর্ভাগ্য, যে কুকথা, অসত্য অর্ধ সত্য, অর্ধ নগ্ন ভাষায় লোককে গালাগালি করছে। ভাবছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তো পেয়ে গেছি একটা সহজ সরল ঘরের মেয়ে, তাঁকে রোজ গালাগালি দেয়, সে তো প্রতিবাদ করে না। কারণ সে তো জানে শেষ অবধি আমিই জিতব। আমাকে আঘাত আঘাত করতে করতে বাংলার মনীষীদের আঘাত করছে। বলছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাকি শান্তিনিকতনে জন্ম নিয়েছিলেন। কী চায় এরা, ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিতে?"
এরপর মুখ্যমন্ত্রী এদিন বাংলার বুদ্ধিজীবীদের কাছে আবেদন করেন, এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে। "অমর্ত্য সেনকে কেন অপমান করা হচ্ছে? জবাব চাই, বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ব না", বলেন মমতা। এদিন বিশ্বভারতীর শতবর্ষ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপির দাবি, উপাচার্য আমন্ত্রণ করা সত্ত্বেও তিনি ভার্চুয়াল সমাবেশে যোগ দেননি। এদিন তাঁর উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা বলেন, "ভাই কবে ডাকল, কখন ডাকল আমার কিছুই জানা নেই। আমি বিশ্বভারতীতে যখন যাচ্ছি আমার কাছে সময় চেয়েছিলেন। আমি সময় দিতে পারিনি। কিন্তু শতবর্ষ অনুষ্ঠানের জন্য কোনও আমন্ত্রণ নেই, ফোনও নেই। আমাকে ডাকা হয়নি।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন