গতকালই উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক থেকে নাম না করে বিজেপিকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিঁধেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, যাঁরা আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কথা বলেন তাঁরা একটু উত্তরপ্রদেশের দিকে তাকান। আজ, টুইটেও হাথরাসের ঘটনায় যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন মমতা। এবার চাঁচাছোলা ভাষায় বিজেপির দলিত রাজনীতি নিয়ে একাহত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গে পথশ্রী অভিযান প্রকল্পের উদ্বোধনে এসে বিজেপিকে তোপ দাগলেন মমতা। বললেন, "দলিতদের উপর আক্রমণ হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ হচ্ছে। এদিকে বাইরে থেকে খাবার নিয়ে এসে আবার দলিতদের বাড়িতে খাওয়া হয়!"
হাথরাসের দলিত তরুণীর মৃত্যু বারবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে উত্তরপ্রদেশে দলিতদের উপর অত্যাচার দিন দিন বাড়ছে। হাথরাস থেকে বলরামপুর, যোগীর রাজ্যে সর্বত্র দলিতরা পাশবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এদিকে বাংলার উত্তরবঙ্গে গত লোকসভা নির্বাচনে আদিবাসী ভোট পকেটস্থ করতে কোনও কসুর ছাড়েনি বিজেপি। গেরুয়া শিবির তাতে ১০০ শতাংশ সফলও হয়েছে। আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কে ধস নেমেছে ঘাসফুল শিবিরের। উত্তরবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের আগে নকশালবাড়িতে এক দলিতে নেতার বাড়িতে পাত পেড়ে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তারপর আদিবাসী অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার থেকেই লোকসভার প্রচারাভিযান শুরু করে বিজেপি। তার ফলও পেয়েছে বিজেপি। উত্তরবঙ্গের চা-বাগান ও তরাই অঞ্চলে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন হাথরাস গণধর্ষণ কাণ্ডে যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন মমতা
আদিবাসীরা মুখ ফিরিয়েছেন সেকথা মাথায় রয়েছে মমতার। তাই করোনা কালেও প্রশাসনিক বৈঠকের জন্য ছুটে এসেছেন উত্তরবঙ্গেই। আদিবাসীদের শংসাপত্র, ভাষা অ্যাকাডেমি, শ্রম দফতরে কাজ যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয় তা বারবার আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। তার মধ্যেই হাথরাসের দলিত তরুণীর গণধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনায় হাতে অস্ত্র পেয়ে গিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। দলিত কার্ড দিয়েই উত্তরবঙ্গে পদ্মবাগান উপড়ে ফেলার চেষ্টায় মাঠে নামলেন মমতা। বিজেপির দলিত-আদিবাসী প্রেম যে পুরোটাই ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি তা এদিন কটাক্ষের সুরে বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন