রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার ফের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বেশ কয়েকটি ঘোষণা করেন। এছাড়াও ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক হিংসায় নিহতদের পরিজনদের ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করবে সরকার। সাহায্যের ক্ষেত্রে কোনও পক্ষপাতিত্ব করা হবে না। যে দলেরই কর্মী খুন হয়েছেন তাঁদের পরিবারকে সাহায্য করা হবে।
Advertisment
রাজ্যের ১০৫টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, জেলা হাসপাতালে পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানো হবে। ডায়মন্ড হারবার ও কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে ইতিমধ্যে বসে গিয়েছে। যে সমস্ত ডাক্তারি পড়ুয়ারা ইন্টার্নশিলপ করছেন তাঁদের কোভিডের চিকিৎসায় কাজে লাগানো হবে। তাঁরা এর জন্য একটা সরকারি সুবিধা পাবেন। এর ফলে ২০০০ ডাক্তার-নার্স বেশি পাব। ১.৭০ লক্ষ স্থানীয় ডাক্তারকে স্বাস্থ্যসুরক্ষা কর্মী নাম দিয়ে জেলাস্তরে কাজে লাগানো হবে। সমস্ত হাসপাতালে ৪০ শতাংশ বেড বাড়ানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে কোভিডের জন্য।
করোনায় মিটিং-মিছিল বন্ধ, তাও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষকে উস্কানি দিচ্ছেন। তাঁদের বলব, উস্কানি দেবেন না। ২৪ ঘণ্টাও হয়নি সরকারের, তার মধ্যেই চিঠি দেওয়া হচ্ছে, সেন্ট্রাল টিম চলে আসছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চলে আসছে। মানুষের রায়কে মেনে নিন। মানুষ রায় দিয়েছে সেটা মেনে নেওয়াই ভাল। একটু সংযত হোন। কমিশনের অধীনে সরকার থাকাকালীন ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
উদয়ন গুহের হাত ভেঙে দিয়েছে। কোচবিহারে বেশি অশান্তি করছে বিজেপি। ওখানে গুন্ডামিতে বেশি উস্কানি দিচ্ছে বিজেপি। সেখানে খুব অত্যাচার করছে কারণ ওখানে বেশি সিট জিতেছে বলে। আমি সবাইকে বলছি, কেউ অশান্তি করবেন না। নাহলে কিন্তু পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে কোনওরকম অশান্তি করতে দেওয়া হবে না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বলছি, কেন প্ররোচনা দিচ্ছেন?
Advertisment
কেন্দ্রীয় টিম দিল্লির হিংসার তো যায়নি, হাথরাসের সময় তো যায়নি, এত লোক অক্সিজেন পাচ্ছেন না, কই তখন তো আসেনি, ভ্যাকসিনের জন্য টিম আসেনি তো! কেন্দ্রীয় দল আসতেই পারে বাংলার বাইরে থেকে এলে আরটি-পিসিআর টেস্ট করতেই হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, পিএম কিষাণ সম্মাননিধিতে সব কৃষকদের ১৮ হাজার টাকা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী এবার কথা রাখুন। সব কৃষকদের নামের তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
লোকাল ট্রেন বন্ধ হওয়ায় অনেকে অসুবিধায় পড়বেন। সবাই যাতে বিনামূল্যে রেশন পায় সব জেলাশাসকদের বলেছি সেটা দেখতে।
পুজো কমিটি, সব ধর্মীয় সংগঠনগুলিকে বলব নিজের নিজের এলাকায় করোনা রুখতে এগিয়ে আসুন। পুজো কমিটি, সর্বধর্ম সমন্বয় কমিটিগুলির সঙ্গে করোনা নিয়ে ভারচুয়াল বৈঠক করা হবে। পুজো কমিটিগুলি নিজের নিজের এলাকায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটা দেখুক।
রাজ্যপাল কী টুইট করেছেন তা নিয়ে বলতে পারব না। ওনাকে টুইট করতে দিন। ওনাকে তো কিছু করতে হবে। ওনার আর কী কাজ আছে। ওনাকে জিজ্ঞেস করুন।
শীতলকুচিতে নিহতদের পরিবারকে সবরকম সাহায্য করা হবে। সিআইডি তদন্ত করছে। রিপোর্ট এলেই বলতে পারব।
২০ হাজার কোটি টাকায় দিল্লিতে সৌন্দর্যায়ন হতে পারে, অথচ দেশবাসীকে ফ্রি ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে ৩০ হাজার কোটি টাকা নেই। দেশের পরিস্থিতি খুব খারাপ। করোনা পরিস্থিতিকে একদম পাত্তা দেয়নি, ভোটে জেতার জন্য। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা কোভিড হাসপাতালগুলি ঘুরে দেখুক, কেন বাংলায় আসছেন বার বার?