একুশের বিধানসভা থেকে বাইশের পুরসভা ভোটে বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল। মানুষের আস্থা ক্রমশ বাড়ছে ঘাস-ফুলে। কাজের মাধ্যমে প্রতিদান দিতে না পারলেই বিপদ। জানেন পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি এও জানেন যে, বিধানসভার অন্দরে তাঁকে ছেড়ে কথা বলবে না বিজেপি। সোমবার বাজেট অধিবেশন শুরুর দিনের ঘটনাই তার প্রমাণ। তাই বিরোধীদের পাল্টা দিতে এবার কোমর বাঁধার প্রস্ততি শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আগেও বলেছেন, মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে আরও একবার সেকথাই স্মরণ করিয়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিধায়কদের উদ্দেশ্য করে তাঁর কত বার্তা, 'অধিবেশন চলাকালীন সব বিধায়ককে বিধানসভায় আসতেই হবে। এটা নিয়ম করে ফেলুন। বিশেষ করে বাজেট আধিবেশনে ভোটাভুটির ব্যাপার থাকে। আমাদের হেরে যাওয়া মানে সরকারের হেরে যাওয়া। মন্ত্রীদের বলব অধিবেশন চলাকালীন কোনও কর্মসূচি বাইরে করবেন না। বিধানসভায় এসে বসুন, এতে বিধায়কদেরও লাভ হবে। সকালে এলাম আর সই করে চলে গেলাম এসব হবে না। মনে রাখুন বিধানসভাতেও স্কুলে মতো নিয়ম মেনে রোজ আসতে হবে।'
এই নির্দেশের আগেই সোমবার বিধানসভার তুলকালাম পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন মমতা। বলেন, 'গতকাল বিধানসভায় বিজেপির নির্লজ্জ্ ভূমিকা সবাই দেখেছেন। ওদের উদ্দেশ্য ছিল ভয়ঙ্কার, ওরা গণতন্ত্রের হত্যা চেয়েছিল। হেরেই বলবে ঝামেলা হচ্ছে। দেখবেন কন্টাই, ব্যারাকপুর ও বহরমপুরের মতো কিছু জায়গাতেই ঝামেলা হয়ে তাকে। গতকাল আমাদের দলের মেয়েরা বাংলার সম্মান বাঁচিয়েছেন। আমি চাই না ভোটে কোথাও শান্তি বিঘ্নিত হোক। কিন্তু, হলে প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।'
পুরভোটে এবার টিকিট না পেয়ে বহু তৃণমূল নেতা, বিদায়ী কাউন্সিলর নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ভোটে প্রাপ্তির শতাংশের বিচরে তৃণমূলের পরই এবার নির্দলদের অবস্থান। বেশ কযেকটি জায়গায় নির্দলরাই পুরবোর্ড গঠনের নির্ণায়ক শক্তি। কিন্তু, নির্দলদের নিয়েই এবার দলের নেতাদের কড়া বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, 'কিছু নেতা নির্দলদের বগলে করে ঘুরছে। নির্দল প্রার্থীদের গাড়িতে নিয়ে ঘুরছে, ছবি তুলছে। এদের বারবার বলা সত্ত্বেও কাজ হচ্ছে না। কিছু লোকজনকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে। ৭-৮ জনের নাম আমার কাছে আছে। যারা নির্দলদের ইন্ধন দিচ্ছেন, তাঁদের প্রথমে সতর্ক করা হবে, তারপর শোকজ করা হবে, দু’বার শোকজ হয়ে গেলে সোজা নাম কেটে দেব।'
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে নিয়ে এদিন দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিও গড়ে দিয়েছেন দলনেত্রী।
আরও পড়ুন- দলের রাশ মমতার হাতেই, I-PAC-এর জনসংযোগেই জোর তৃণমূলের