এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং পশ্চিমে ভোট প্রচারে রাজ্য পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, ‘বাংলার পুলিশ এত ভয় পায় কেন? ওরা রাজ্যের চাকরি করেন। বাড়ি বাড়ি বাহিনীকে পাঠিয়ে ওরা বসেছিল কেন?’ তাঁর হুঙ্কার’ ’৬৩টি এফআইআর হয়েছে। আইনিভাবে বুঝে নেব। প্রত্যকটা কেস করাবো, কাউকে ছেড়ে কথা বলব না।‘ তাঁর অভিযোগ, ‘নন্দীগ্রামে গুন্ডা পাঠিয়েছে বিজেপি। বিহার-ইউপি থেকে লোক এনেছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিজেপিকে ভোট দিতে ভয় দেখাচ্ছে। পুলিশের পোশাকে ঘুরে বেড়াচ্ছে।‘
যদিও মমতার এই হুঙ্কারকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘রাজ্য পুলিশ এতদিন যথেচ্ছাচার চালিয়েছে। এবার বুঝতে পারছে পরিবর্তন আসন্ন তাই ঘুরে গিয়েছে।‘
এদিকে, দলে সম্মান নেই বলে তৃণমূল ছেড়েছেন রায়দিঘির দু’বারের বিদায়ী বিধায়ক দেবশ্রী রায়। তবে, জোড়া-ফুলের অন্দরের খবর ছিল, টোটোকাণ্ড, এলাকায় না দেখতে পাওয়ার কারণে দেবশ্রীকে নিয়ে রায়দিঘির মানুষের বিস্তর অভিযোগ-অসন্তোষ ছিল। সেই কারণেই এবার আর টিকিট পাননি রূপোলি পর্দায় এই প্রতিনিধি। এদিন রায়দিঘিতে দাঁড়িয়ে দলীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের কথা মেনে নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। সাফ জানিয়েছেন, ‘দেবশ্রী রায়কে নিয়ে ক্ষোভ ছিল, তাই ওকে প্রার্থী করিনি। আর সেই রাগেই ও বিজেপিতে যোগ দিয়েছে।’ ছাড়াও প্রচারমঞ্চ থেকে এদিন বিজেপিকে তুলোধনা করেন মমতা। মিমকে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। হিন্দু-মুসলমান ভোট ভাগাভাগির জন্যই এরাজ্যের ভোটে বিজেপি হায়দরাবাদ থেকে তাদের এক বন্ধু আসাদউদ্দিন ওয়েইসিকে নিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ মমতার। একই সঙ্গে বাম-কংগ্রেস মোর্চার শরিক আইএসএফ পৃষ্ঠপোষক আব্বাস সিদ্দিকিকে ‘চ্যাঙড়া’ বলে তোপ দাগেন মমতা।
রায়দিঘিতে কী বলেছেন মমতা?
- ‘দেবশ্রী রায়কে নিয়ে ক্ষোভ ছিল, তাই ওকে প্রার্থী করিনি। আর সেই রাগেই ও বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। কলকাতা থেকে এত দূরে আসতে পারত না। যিনি এখানকার বিজেপি প্রার্থী, তিনি তৃণমূলের টিকিট চেয়েছিলেন।
- ‘বিজেপির সবটাই তৃণমূলের থেকে ধার করা। বেশিরভাগটাই সিপিএমের হার্মাদ রয়েছে, বাকিটা আমাদের দলের গদ্দাররা।’
- ‘আগে সুন্দরবনের দিকে কেউ ফিরেও তাকাতো না। এখন অনেক উন্নতি হয়েছে। আরও হবে।’
- ‘আমপানে কেউ ছিল না। আমি রাত জেগে পাহারা দিয়েছি। দু-একটা জায়গায় যাঁরা সাহায্য পাননি আমি তাও করে দেব বলে কথা দিচ্ছি।’
- ‘সংখ্যালঘু ভাই-বোনেদের বলব হায়দরাবাদ থেকে বিজেপির এক বন্ধু এসেছে। আর ফুরফুরা শরিফের এক চ্যাঙড়াকে নিয়ে সে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে কমিউনাল স্লোগান দিচ্ছে। আর হিন্দু মসলমানে ভাগাভাগির চেষ্টা করছে। আর মুসলমানের ভোটটাকেও ভাগাভাগির চেষ্টা করছে।’
- ‘নন্দীগ্রামে আমার ভোট খুব ভালো হয়েছে। ওর যা করেচিল। মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছেন।’
- ‘নন্দীগ্রামের গ্রামগুলোতে গিয়ে বিজেপি হুমকি দিয়েছে। মেয়ে-বাচ্চা তুলে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়েছে।’
- ‘বিজেপি পুলিসের ড্রেস পরিয়ে ফেক পুলিস নিয়ে যাচ্ছে। গ্রামের লোককে ভয় দেখাচ্ছে। ওদের কথা শুনবেন না। ভোটের পর ওরা পালাবে। আমরা বাংলার লোক, আমরাই থাকব।’
- ‘তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার ১০ বছরে যা করেছে কোনও সরকার কোনওদিন তা করতে পারেনি, করবে না।’