রাত পোহালেই নন্দীগ্রামে হাই ভোল্টেজ ভোট। দুই মেদিনীপুরের বাইরে বেরিয়ে এবার ভোটের লড়াই আরও জমজমাট। লাল, সবুজ, গেরুয়া, কোনও প্রতিপক্ষ এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ ভোট ময়দানে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনী আবহে ফের বিজেপি বিরোধী ফ্রন্টকে এক ছাতার তলায় আনতে সক্রিয় হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্বিতীয় দফার ভোটের আগের দিন গেরুয়া শিবিরের প্রতি আক্রমণ শানিয়ে অবিজেপি দলগুলোকে এক ছাতার তলায় আসতে আবেদন করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এই মর্মে অবিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি লেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সনিয়া গান্ধী, শরদ পওয়ার, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এমকে স্টালিন, তেজস্বী যাদব, উদ্ধব ঠাকরে-সহ বিজেপি বিরোধী মুখগুলোকে এই মর্মে বার্তা পাঠান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
গণতন্ত্র এবং সংবিধানের ওপর ক্রমাগত আক্রমণ করছে বিজেপি। আমাদের উচিত একটা ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গড়ে তোলা। এই ভাষাতেই চিঠি লিখেছেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি লেখেন, ‘অবিজেপি রাজ্যে রাজ্যভবনকে ব্যবহার করে অযথা প্রশাসনিক কাজে নাক গলাচ্ছে বিজেপি। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিজেপি বিরোধী নেতাদের অযথা সিবিআই-ইডি দিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে। ইচ্ছা করে অবিজেপি রাজ্যগুলোর প্রতি বরাদ্দ কেন্দ্রীয় অনুদান আটকে রাখছে মোদী সরকার। রাজ্য সরকারের উন্নয়নমুলক প্রকল্পে বাধা দিতেই এই অসাধু উদ্যোগ।‘
তাঁর লেখা চিঠিতে মোদী সরকারে বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হয়েছে। জাতীয় সম্পদ বেচে দেওয়া অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত। কারণ সেই সম্পদ মানুষের। এভাবেই বিলগ্নিকরণের সমালোচনা করে বিজেপি-বিরোধী দলের নেতাদের চিঠি লেখেন মমতা।
ইতিমধ্যে বঙ্গ ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে দাঁড়িয়ে বার্তা পাঠিয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল। ব্যক্তিগত ভাবে এসে মমতার সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। অখিলেশ যাদব, উদ্ধব ঠাকরে প্রত্যেকেই মমতাকে সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এই পরিবেশে বাংলার ভোট আবহে জাতীয় রাজনীতির বিরোধী নেত্রী হিসেবে বিজেপি-বিরোধী মুখগুলোকে এক করতে মমতার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছে পর্যবেক্ষক মহল। দিন কয়েক আগে একই আবেদন নিয়ে রাহুল গান্ধীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন ডিএমকে প্রধান স্টালিন।
এখন দেখার রাহুল গান্ধী, অরবিন্দ কেজরিওয়াল না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আদতে কে সফল হন বিজেপি-বিরোধী ফ্রন্ট গঠনে।