রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত বরণ করে নিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এদিন প্রায় পৌনে দুটো নাগাদ প্রথম রাজনৈতিক বক্তব্য পেশ করেন মিঠুন। অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সেই বক্তৃতায় সেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে রাজনৈতিক আক্রমণের দিকে যায়নি টলিউডের দাদা। নিজের ছবির কিছু বিখ্যাত সংলাপ দিয়েই উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের মনোরঞ্জন করার চেষ্টা করেন মিঠুন।
তার বক্তব্যে ‘মারব এখানে, লাশ পড়বে শ্মশানে’ যেমন জায়গা পেয়েছ, তেমন ‘এক ছোবলেই ছবি’ও জায়গা পেয়েছে। উপস্থিত কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সব হবে। এই দাদার উপর ভরসা রাখুন। আমি কোনওদিন মুখ ফিরিয়ে চলে যাব না।‘ তবে তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একটি বাক্যও ব্যয় করেননি টলিউডের মহাগুরু। তিনি বলেন, 'আজকের দিনটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো। কানা গলি থেকে বর্তমানে আমি বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের জনপ্রিয় নেতা মোদীর মঞ্চে হাজির। এটা স্বপ্ন ছাড়া আর কী! আর সেদিন স্বপ্ন দেখেছিলাম গরীবদের সেবা করবো। সেটাও ক্রমশ বাস্তবায়িত হওয়ার পথে। মন থেকে স্বপ্ন দেখলে তা বাস্তবায়িত হয়। তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ আমি। বাঙালি বলে আমি গর্বিত। মনে রাখবেন আমি পালিয়ে যাওয়ার জন্য আসিনি। বিশ্বাস রাখুন আমার উপর। আমি জলঢোড়াও নই, আমি বেলেবোড়াও নই, আমি জাত গোখরো, এক ছোবলেই ছবি, হ্যাঁ, এবার বাংলায় এটাই হবে।'
এদিন অবশ্য বেলগাছিয়ার আত্মীয়র বাড়ি থেকে বেরনোর পর ব্রিগেডমুখী রাস্তায় উন্মাদনার কারণে তাঁর গাড়িকে দাঁড়াতে হয়েছে। সবচেয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে। সেখানে সিগন্যালে মিঠুনের গাড়ি দাঁড়ালে তাঁকে দেখতে বাস এবং অন্য গাড়ি থেকে নেমে পড়েন অনুরাগীরা। পড়ে যায় সেলফি তোলার হিড়িক। প্রায় ১০ মিনিট জনস্রোতে আটকে থাকার পর গাড়ি ঘুরিয়ে কলেজ স্ট্রিট দিয়ে বের করা হয় তাঁর কনভয়।
এদিকে, বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের তরফে দাবি, ১০ লক্ষ পেরিয়েছে জমায়েত। গরম, যানজট এবং পরিবহণের সংখ্যাধিক্য কম থাকায় বহু লোক ব্রিগেডের আশেপাশে আটকে রয়েছেন। এমনটাই দাবি করেছে মুরলিধর সেন লেন। এদিন দলীয় তরফে একটা শৃঙ্খলার বার্তা বরাবর দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। জমায়েতে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলেই মঞ্চে উপস্থিত বক্তারা, বক্তব্য থামিয়ে সেই বিশৃঙ্খলা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
তবে, এই ভোটমুখী বাংলায় এই ব্রিগেড বিজেপির কাছে করে দেখানোর জমায়েত। এমনটাই গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উপস্থিত কর্মী-সমর্থক কিংবা টিভির পর্দায় চোখ রাখা বিজেপি কর্মীদের কী বার্তা দেন, সেটাই মুল।
অপরদিকে, এদিন কলকাতা বিমানবন্দরে নেমেই ট্যুইট করেন প্রধানমন্ত্রী তিনি লেখেন, ‘কলকাতায় নামলাম। এখন বিশাল মিছিলের দিকে যাচ্ছি। দলের সব কর্মী সমর্থকদের এবং বাংলার মানুষের সঙ্গে দেখা করার জন্য মুখিয়ে আছি।”