Advertisment

'রিকশা এবার বিধানসভায়', প্রার্থী হতেই মনোরঞ্জন ব্যাপারির হয়ে প্রচার শুরু TMC-র

তিনি জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন তাঁকে বলেন আপনাকে দায়িত্ব নিতে হবে। তখন তিনি সাতপাঁচ না ভেবেই হ্যাঁ করে দেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

আনন্দপুরের ভাড়া কড়া ঝুপড়িতে মনোরঞ্জন ব্যাপারী। ছবি: পার্থ পাল

রিকশা এবার বিধানসভায়। বলাগড়ে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে দলনেত্রী মনোরঞ্জন ব্যাপারির নাম ঘোষণার পর থেকেই এই প্রচার শুরু হুগলিতে। শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন তাঁর নাম ঘোষণা করেন, তিনি বলেন, 'মাটির মানুষ মনোরঞ্জন ব্যাপারি। রান্না করেন, রিকশা টানেন, সাহিত্য চর্চাও করেন।' দলিত সাহিত্য অকাডেমির সেই সভাপতি এবার বিধানসভা নির্বাচনে সবচেয়ে চর্চিত নাম। তরুণ বয়সে পথভ্রষ্ট হয়ে নকশাল আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু ভ্রম যখন ভাঙে তখন তাঁর মনে হয়, 'সামাজিক সাম্যের লড়াইটা জরুরি।' তখন থেকেই বন্দুক ছেড়ে রিকশা হাতে তুলে নিয়েছিলেন তিনি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হলে কী হবে তাঁর বিধায়ক হিসেবে ভূমিকা?

Advertisment

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার এই প্রশ্নের জবাবে সারল্যের সুরে মনোরঞ্জন ব্যাপারি বলেন, 'আমি যখন রিক্সা টানতাম যাত্রী আমাকে পথ চেনাতেন। সেই পথে যেতে যেতেই খানাখন্দ, বড় গাড়ি সামনে চলে আসত। আমি চেষ্টা করতাম আমার যাত্রীর কোনও অসুবিধা না করে সেই বাধা কাটিয়ে তাঁকে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে। এখানেও সেই পথ অনুসরণ করবো।'

তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, হিন্দু উদ্বাস্তু হিসেবে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে এদেশে ঘাঁটি গেড়েছিল মনোরঞ্জন ব্যাপারির পরিবার। তাঁর পর থেকেই জীবন যুদ্ধে গা ভাসিয়েছেন তিনি।  চা বেচেছেন, ডোমের কাজ করেছেন, রাধুঁনির কাজ করেছেন এমনকি রিকশাও টেনেছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারি। তাঁর সাদামাটা জীবনযাপন নিয়ে ওয়াকিবহাল ডান-বাম সবপক্ষই।

এতকিছুর মধ্যেও দলিত অধিকার রক্ষায় লিখে ফেলেছেন একাধিক বইও। দলিতের আত্মজীবনী হিসেবে লিখেছেন ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন। ২০১৯ সালে সেই বইয়ের ইংরাজি অনুবাদ করেন শিপ্রা মুখোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন বাতাসে বারুদের গন্ধ। সেই বছরেই এই বইয়ের ইংরাজি অনুবাদ করেন অরুণাভ সিনহা।

তিনি জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন তাঁকে বলেন আপনাকে দায়িত্ব নিতে হবে। তখন তিনি সাতপাঁচ না ভেবেই হ্যাঁ করে দেন। গত এক দশক ধরে নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাজ তাঁকে তৃণমূলের প্রতি টেনেছে। এমনটাই জানান মনোরঞ্জন ব্যাপারি।

তাঁর সাহিত্যে মাটির গন্ধ এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের বঞ্চনা এবং অধিকারের লড়াই বরাবর ফুটে উঠেছে। তবে সাহিত্যচর্চা ছেড়ে রাজনীতি কেন? সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, 'বিজেপির করা বিভাজনের রাজনীতির বিরোধিতা এখনই করা উচিত। আপনারা বাতাসে বিষের গন্ধ পাচ্ছে না? সেই দূষণ এখনই বন্ধ না করলে বাংলার ভূমিপুত্ররাই এনআরসি আর সিএএ'র জন্য ডিটেনশন ক্যাম্পে কাটাবে।'

জানা গিয়েছে, শুক্রবার প্রার্থীতালিকা ঘোষণা হতেই তাঁর মুকুন্দপুরে ঝুপড়িতে কর্মী-সমর্থকদের ডল নেমেছিল। সাহিত্য কিংবা পেশার মধ্যে দিয়ে তিনি যেমন অন্যায় ও বিভাজনের প্রতিবাদ করেছেন, বিধায়ক নির্বাচিত হলে সেই কাজ চালিয়ে যাবেন। সংবাদমাধ্যমকে এমনটা জানান মনোরঞ্জন ব্যাপারি।

tmc Mamata Banerjee Hooghly West Bengal Assembly Election 2021 Monoranjan Byapari
Advertisment