সম্প্রতি ছেলের পথে হেঁটে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন শিশির অধিকারী। অনুগামীরা বলেন, বরাবরই তিনি সোজাসাপ্টা কথা বলেন। শনিবার ভোট দিয়ে বুথের বাইরে বেরিয়েই কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী সাফ বলেলেন, ‘হাম কমল মে দিয়া হ্যায়’। অর্থাৎ তিনি বিজেপিকেই ভোট দিয়েছেন।
গত ২১ মার্চ এগরায় অমিত শাহের মঞ্চে হাজির হলেও এখনও খাতায়-কলমে তিনি কাঁথির তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু শনিবার কাঁথির প্রভাত কুমার কলেজের বুথে ভোট দেওয়ার পরে শিশির সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত শক্ত করার কথাও বলেছেন। পাশাপাশি, গণতন্ত্রের উৎসবে সর্বতো ভাবে অংশ নেওয়ার জন্য আমজনতার কাছে আবেদন জানান তিনি।
তৃণমূলের নাম না করে শিশির এদিন বলেন, ‘আমি চাই বিরোধীদের শুভবুদ্ধি হোক। তাঁর এক বার পরাজয়ের স্বাদ নিতে শিখুন।’ এদিন কাঁথিতে তাঁর ছেলে সৌম্যেন্দুর উপর হামলা এবং চালকের আহত হওয়া নিয়েও প্রশ্ন করা হয় শিশিরকে। আহতের চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে শিশির বলেন, ‘‘কাচ ভেঙে হাতে লেগেছে। কড়া ডোজ তো দিতেই হবে।’ তবে শিশিরের ‘কড়া ডোজ’ মন্তব্যের ‘ব্যাখ্যা’ নিয়ে নানা জল্পনা চলছে জেলা রাজনীতিতে।
এদিকে, শেষ পর্যন্ত খাসতালুকেই আক্রান্ত অধিকারী পরিবারের ছোট ছেলে তথা বিজেপি নেতা সৌমেন্দু অধিকারী। অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুরের সাবাজপুটে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীবাহিনী ব্যাপক ভাঙচুর চালায় সৌমেন্দু অধিকারীর গাড়িতে। মারধর করা হয় তাঁর গাড়ির চালককেও। এই ঘটনার দন্য তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান। যদিও অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
সৌমেন্দু জানিয়েছেন, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি রামগোবিন্দ দাসের নেতৃত্বে বুথ জ্যাম করার খবর পেয়ে সাবাজপুট গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পরিকল্পনামাফিক হামলা চালিয়েছে তাঁর গাড়িতে। কাঁথি থানার আইসি-র সঙ্গে শাসক দলের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তোলেন সৌমেন্দু। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের না করা না পর্যন্ত তিনি ঘটনাস্থল ছাড়বেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
প্রথম দফার ভোটগ্রহণের দিন বেলা গড়াতেই দুই মেদিনীপুরের একাধিক বুথে অশান্তির খবর প্রকাশ্যে আসে। শালবনিতে আক্রান্ত হন বামপ্রার্থী। এসবের মধ্যেই প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট হওয়ায় এদিন সকালে একাধিক বুথে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছিলেন তিনি। যান পূর্ব মেদিনীপুরের সাবাজপুটে। সেখানে তাঁকে দেখেই উত্তেজনা ছড়ায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আক্রান্ত হন সৌমেন্দু অধিকারী।