রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। মঙ্গলবার কমিশন মুখবন্ধ খামে ৫০০ পাতার একটা রিপোর্ট হাইকোর্টে দাখিল করেছে। নবান্নের অনুরোধে সেই রিপোর্ট বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে আনা হয়। তাতে কুখ্যাত দুষ্কৃতীর তালিকায় রয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর নাম। ওই রিপোর্টে হিংসার ঘটনায় একাধিক মহিলার নামও রয়েছে। যা নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।
কমিশনের দেওয়া রিপোর্টে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বিধায়ক পার্থ ভৌমিক, শওকত মোল্লা, তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহকে কুখ্যাত দুষ্কৃতী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল এই অভিযোগ মানতে নারাজ। পাল্টা শাসকদলের নেতা-বিধায়কদের মন্তব্য, এই রিপোর্ট সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক নিজের ফেসবুক পেজে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে কটাক্ষ করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
কমিশনের রিপোর্টে আরও উল্লেখ, ‘হিংসার ঘটনা নিয়ে রাজ্যের কোনও প্রশাসনিক কর্তা বা রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের মুখ খুলতে দেখা যায়নি। দিনের পর দিন সাধারণ মানুষের জীবনের অধিকার, বাক্স্বাধীনতার মতো মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলেও রাজ্য প্রশাসনকে এই বিষয়ে নিরুত্তাপ। বাংলায় যে হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার পিছনে রাজনীতি, আমলাতন্ত্র এবং অপরাধ জগতের আঁতাঁত রয়েছে। রাজ্যে আইনের শাসন নয়, শাসকের শাসন চলছে।’
আরও পড়ুন ‘রবীন্দ্রনাথের মাটিতে হিংসা!’, ভোট পরবর্তী হিংসার রিপোর্টে সরকারকে তুলোধোনা কমিশনের
কমিশনের ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’-র রিপোর্ট প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য না শুনেই এই রিপোর্ট তৈরি করেছে কমিশন। আমাদের বিশ্বাস, রাজ্যকেও হলফনামা পেশ করার সুযোগ দেবে আদালত। আর রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতির দায়িত্বে তখন নির্বাচন কমিশন ছিল। আমি আর কিছু বলতে চাই না।‘
এই রিপোর্ট প্রসঙ্গে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, "আমার নামে পশ্চিমবঙ্গের কোনও থানায় আমার নামে কোনও অভিযোগ থাকলে আমি মানবাধিকার কমিশনকে পুরস্কৃত করব। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমার নাম জড়ানো হয়েছে। অত্যন্ত লজ্জার বিষয় এই রিপোর্ট। কারও সম্পর্কে না জেনে এমন রিপোর্ট অত্যন্ত দুঃখজনক। দল যেভাবে এই রিপোর্টের পাল্টা জবাব দেবে সেটাই মেনে চলব।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন