Advertisment

'কেঁচো খুড়তে গিয়ে কেউটে বেরোবে', মমতাকে মেসেজ ফাঁসের হুঁশিয়ারি রাজীবের

'মন্ত্রিত্বে থাকাকালীন নিয়োগ ঘিরে কে কবে কোথা থেকে সুপারিশ করেছে, কালীঘাট থেকে কোন সুপারিশ এসেছে- সব প্রমাণ রয়েছে। কেঁচো খুড়তে খুড়তে কেউটে সাপ আপনি বার করছেন।'

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Rajib Banerjee opened his mouth after the controversial facebook post

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়

দুপুরে বন-সহায়ক নিয়োগ ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নাম না করলেও তাঁর নিশানায় ছিলেন তৃণমূল ত্যাগী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মমতাকে পাল্টা দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী। নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে মেসেজ ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন রাজীব। বলেছেন, 'মন্ত্রিত্বে থাকাকালীন নিয়োগ ঘিরে কে কবে কোথা থেকে সুপারিশ করেছে, কালীঘাট থেকে কোন সুপারিশ এসেছে- সব প্রমাণ রয়েছে। কেঁচো খুড়তে খুড়তে কেউটে সাপ আপনি বার করছেন।'

Advertisment

বুধবার আলিপুরদুয়ারে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'বন দফতরের বন-সহায়ক পদে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। অনেক অভিযোগ পেয়েছি। একজন সেসব করে বিজেপিতে পালিয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকার তা নিয়ে তদন্ত করছে।' মমতা মন্ত্রিসভায় শেষ পর্যন্ত বনদফতরের মন্ত্রী ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আমলেই বন দফতরে বন-সহায়ক পদে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এক্ষেত্রে নবান্ন তদন্ত করলে বিজেপি নেতা রাজীবকে যে অস্বস্তির মুখে পড়তে হতে পারে তা স্পষ্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী।

কিন্তু দুপুরে আক্রমণের জবাব দিতে বেশি দেরি করেননি রাজীববাবু। বন-সঙায়ক পদে নিয়োগ নিয়ে হুগলি ধনেখালিতে পাল্টা তিনি নিশানা করেন তৃণমূল নেত্রীকে। জানতে চান, ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি তৃণমূলে ছিলেন। কেন সেই সময় ওই দুর্নীতির তদন্ত হল না? এক্ষেত্রে 'কেঁচো খুড়তে গিয়ে কেউটে বেরোবে' বলে ইঙ্গিতপূর্ণ হুঁশিয়ারি দেন বিজেপি নেতা।

কী বলেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়?

  • 'মুখ্যমন্ত্রী আজ বন-সহায়ক পদে নিয়োগ ঘিরে কারসাজির কথা বলছেন। বলছেন তদন্ত হবে। মুখে না বললেও উনি আমাকেই ইঙ্গিত করেছেন। তাহলে বলি, বনসহায়ক পদে নিয়োগ আমি নিরপেক্ষাভাবে বোর্ডের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। নভেম্বরে নিয়োগ হয়েছিল, আমি দল ছেড়েছি ৩০ জানুয়ারি। প্রথমেই জানতে চাই কেন তখন তদন্ত করা হল না?'
  • '৮ই অক্টোবর বীরভূমের এক বড় নেতা আমাকে ফোন করে ধমকি দিয়ে বন-সহয়াকের সহ পদ তাঁকে দেওয়া কথা বলেছিলেন। আমি আপনাকে মেসেজ করে জানিয়েছিলাম।'
  • 'আপনি পাল্টা ফোনে বলেছিলেন সব জেলার তৃণমূল নেতাদের কোটা দেখে কিছু কিছু করে দিয়ে দাও। এতদিন মুখ না খুললেও আমনার অভিযোগের প্রেক্ষিতেই সব বলতে বাধ্য হচ্ছি। ৮ অক্টোবর সকাল ৯.৫৮-তে কথা হয়েছিল। আমার কাছে ওই মেসেজ এখনও রয়েছে।'
  • 'কোথা থেকে কোন নেতা-বিধায়ক কী সুপারিশ করেছিলেন, কালীঘাট থেকে কী সুপারিশ এসেছিল সব তথ্যপ্রমাণ আমার কাছে যত্ন করে রয়েছে। কেঁচো খুড়তে খুড়তে আপনি কেউটে বের করছেন। আপনি এখন আলিপুর দুয়ারে রয়েছেন, আপনার দলের জেলা সভাপতিকে জিজ্ঞেস করুন কী সুপারিশ করেছিলেন।'
  • 'আপনি বন-সহায়ক পদের নিয়োগ বাতিল করেদিন। তাহলে দুধ কা দুধ পানি কা পানি হয়েছে যাবে।'
  • 'শউধউ বন-সহায়ক নয় সব চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের সুপারিশ কোথা থেকে কারা করেছিলেন, কীভাবে নিয়োগ হয়েছে সব তথ্য আমার কাছে আছে। তদন্ত করুন। চ্যালেঞ্জ করছি। সামলাতে পারবেন তো?'
  • 'আমি মন্ত্রগুপ্তির শপথ নিয়েছিলাম। তাই এতদিন কিছু প্রকাশ্যে বলিনি। শুধু বলেছিলাম অসন্তোষ রয়েছে। কিন্তু আপনি প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিয়েছেন। তাই বাধ্য হচ্ছি মুখ খুলতে।'

দলে রাখতে তাঁকে তৃণমূলের একাধিক হেভিওয়েট নেতাকে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ফোন করিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেন রাজীববাবু। তবে, আপাতত 'নিয়োগ দুর্নীতি' ইস্যুতে মমতার নিশানাকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য রাজনীতিতে নয়া মাত্রা যোগ করলেন প্রাক্তন বনমন্ত্রী।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Mamata Banerjee Rajib Banerjee
Advertisment