সিঙ্গুরে বিজেপির কৃষক বাঁচাও ধর্নার শেষদিনেও আকর্ষণ রইলেন শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার বিজেপির কিষান মোর্চার এই তিনদিন ব্যাপী আন্দোলনের শেষদিন ছিল। অন্তিম দিনেও শুভেন্দুই ছিলেন এই মঞ্চের প্রধান আকর্ষণ। এই মঞ্চ থেকেই আগামী দিনের কিষান আন্দোলনের পটরেখা তৈরি করে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এবং আগামী দিনে কিষান মোর্চার নেতৃত্বে নবান্ন অভিযান হতে চলেছে বলেও তিনি ইঙ্গিত দেন।
আগামী ২২ থেকে ২৪ ডিসেম্বর কিষান মোর্চার নেতৃত্বে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে ব্লকে বিডিওকে ডেপুটেশন, সঙ্গে থাকবেন মহিলা কর্মীরা। তাঁরা শঙ্খ বাজাবেন। যাতে বিডিওর কানে পৌঁছায়। এরপর আগামী জানুয়ারি মাসের ৫ থেকে ১০ তারিখ জেলায় জেলায় কিষান মার্চ। সুকান্ত জানান, কিষান মার্চের প্রথম দিন ৫ জানুয়ারি রাজ্যের তিনটি কৃষি প্রধান জায়গা ঘাটাল, বর্ধমান এবং আরামবাগে নেতৃত্বে থাকবেন দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী এবং স্বয়ং সুকান্ত মজুমদার। এই কিষান মার্চ শেষ হবে উত্তরবঙ্গে। শেষ দিনে মালদা এবং জলপাইগুড়িতে থাকবেন শুভেন্দু এবং সুকান্ত।
রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আরও জানান, ওই ১০ তারিখেই 'যুদ্ধে'র তারিখ ঘোষণা করা হবে। অর্থাৎ নবান্ন অভিযান। শুরুটা হবে সম্ভবত সাঁতরাগাছি থেকে। শেষ হবে নবান্নতে। তিনি এও জানান, নবান্নের সামনে নয় একেবারে ১৪ তলায় গিয়ে চাষিদের দিয়ে তাঁরা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীকে স্বারকলিপি দেবেন। সুকান্তের ঘোষণা, "ওই সময় মকর সংক্রান্তি চলবে সবাই তিলের নাড়ু খেয়ে আসবেন। হীরকরানিকে তাঁর চেয়ার থেকে টেনে নামাবই।"
অন্যদিকে বিজেপির এই আন্দোলনকে কৃষকবিহীন কৃষক আন্দোলন বলে কটাক্ষ করেন সিঙ্গুরের বিধায়ক রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না। ঐতিহাসিক সিঙ্গুর জমি আন্দোলনের অন্যতম মুখ বেচারাম মান্না জানান, "বিজেপি কত কৃষক দরদী সেটা ভারতবাসী হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে গত এক বছরে। অতই যদি দরদ তাহলে সারের দামটা কমিয়ে দেখাক।"
বেচারামের সংযোজন, "কলকাতা পুর নির্বাচনে একটা আসনও জিততে পারবে না সেই ব্যর্থতা ঢাকতে সিঙ্গুরে এসে এসব নাটক। সিঙ্গুরের পবিত্র জমি অপবিত্র করে দিল।" ইতিমধ্যেই আগামী ২৮ ডিসেম্বর হুগলি জেলা কিষান ক্ষেত-মজুর তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে চুঁচুড়া চলো-র ডাক দেওয়া হয়েছে। শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, বেচারাম মান্না, পূর্ণেন্দু বসু এই মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন।
আরও পড়ুন পুরভোটে আসছে না আধাসেনা, হাইকোর্টে খারিজ বিজেপির আর্জি
চুঁচুড়ার খাদিনা মোড় থেকে ঘড়ির মোড় অবধি চাষিদের নিয়ে মহামিছিল হবে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বে। অন্যদিকে শুভেন্দু জানান, সিঙ্গুর দিয়ে তাঁদের আন্দোলন শুরু হল। তিনি আরও জানান, "আমাদের এই আন্দোলন সরকারের টনক নড়িয়ে দিয়েছে তাই এখন প্রত্যেকটা বিডিও অফিসে বিডিও মাইক ফুঁকে চাষিদের কৃষি বিমার ফর্ম পূরণ করার আহ্বান করছেন। আপনারা কেউ এই ফাঁদে পা দেবেন না।"
তিনি আরও বলেন, "আগামী ১৯ তারিখ কলকাতায় ভোট। আপনারা ১৮ তারিখ প্রত্যেক পার্টি অফিসে জমায়েত করে থাকবেন। আমরা বিধায়করাও কলকাতার আশপাশে বসে থাকব। যদি কোনও অশান্তি হয়, ভোট লুঠ হয় বোমাবাজি হয় তাহলে প্রত্যেকে রাস্তায় বসে পড়ব। গোটা রাজ্য স্তব্ধ করে দেব।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন