রাজ্য কমিটিতে পদ পাওয়া, না পাওয়া নিয়ে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। তারপর জেলা কমিটিগুলির ঘোষণা ঘিরেও একই ছবি। রাজ্য বিজেপিতে ডামাডোলই যেন এখন দস্তুর। এবার ঘটনা কলকাতার। বৃহস্পতিবার কমিটিতে পদ পেয়েও ইস্তফা দিলেন কলকাতার প্রাক্তন কাউন্সিলর। কেন এই পদক্ষেপ? কারণ খুঁজতে গিয়ে মুরলীধর সেন লেনের নেতাদের অস্বস্তি চওড়া হচ্ছে। আর প্রাক্তন কাউন্সিলরের ইস্তফাপত্রকে হাতিয়ার করে ফের রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে তুলোধনা করেছেন বরখাস্ত নেতা।
বৃহস্পতিবারই বিজেপির উত্তর কলকাতা জেলা কমিটির ঘোষণা হয়। সেই কমিটিতে সহ-সভাপতি করা হয় কলকাতার পাঁচবারের কাউন্সিলর সুনীতা ঝাওয়ারকে। কিন্তু, সঙ্গে সঙ্গেই সভাপতি কল্যাণ চৌবের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন গেরুয়া শিবিরের এই নেত্রী। চিঠিতে উল্লেখ, ব্যক্তিগত কারণে জেলা কমিটির সহ-সভাপতির পদে তিনি কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন না। তবে, দলের কর্মী হিসাবে কাজ করবেন।
গেরুয়া দলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ, বিদ্রোহীর সংখ্যা বৃদ্ধির মধ্যেই বহুদিনের নেত্রীর এহেন সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কী পদ্ম বাহিনীর কয়েক দশকের চেনা মুখ সুনীতা অপেক্ষাকৃত নতুন মুখ কল্যাণ চৌবের নেতৃত্বে কমিটিতে থাকতে নারাজ? তাই পছন্দের পদ না পেয়ে তিনিও 'বিক্ষুব্ধ'দের দলে?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংকে সুনীতা ঝাওয়ার বলেছেন, 'আমি আগেই জেলা সভাপতিকে বলেছিলাম যে পার্টিতে কর্মী হিসাবে কাজ করব কিন্তু কোনও পদে থাকব না। তাও ওরা পদ দিয়েছিলেন। আমি অসুস্থ। উত্তর কলকাতার সর্বত্র আমি গিয়ে সংগঠনের কাজ করতে পারব না। তাই এ দিন কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছি।'
পাঁচবার পদ্ম প্রতীকে জিতলেও এবার কলকাতা পুরনিগ ভোট ৪২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে পরাজিত সুনীতা। এহেন ফলাফলে তিনি কী দলের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট? পদত্যাগী সুনীতার কথায়, 'দল আমার পাশেই ছিল। তৃণমূলের ভোট লুঠ করে আমাকে জোর করে হারিয়েছে। তাই ক্ষোভের কোনও কারন নেই। অনেকে পদ না পেয়ে বিদ্রোহী, কিন্তু আমাকে তো দেওয়া হয়েছিল, আমিই ছেড়ে দিলাম।'
পদ্ম শিবিরে অবশ্য কান পাতলে চাপা গুঞ্জন যে, সুনীতা ঝাওয়ারের শ্বশুর, স্বামী বহু দিনের বিজেপি কর্মী। রাজ্য কমিটি, জেলা সভাপতি পদে তাঁরা কাজ করেছেন। এহেন পরিবারের সদস্যাকে অপেক্ষাকৃত কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন জেলা সভাপতির নেতৃত্বে কাজ করতে হবে। যা নিয়ে মুখে না বলেলও অসন্তোষ রয়েছে ঝাওরদের। ফলে বিতর্ক না বাড়িয়ে কমিটি থেকেই সরে গিয়েছেন সুনীতা ঝাওয়ার।
তবে, কলকাতার পাঁচবারের প্রাক্তন কাউন্সিলর সুনীতাদেবীর পদক্ষেপকে তুলে ধরে ফের অমিতাভ চক্রবর্তী ও অমিত মালব্যকে নিশানা করেছেন বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা রীতেশ তিওয়ারি। টুইটে তিনি লিখেছেন, 'বিজেপি থেকে আর কাউকে বরখাস্ত করার দরকার নেই। ভার্চুয়াল চক্রবর্তী ও টুইটার মালব্য দলে থাকলেই সব হয়ে যাবে।'