একুশের ভোটের ফলাফল প্রকাশের বছর ঘুরতে চললো। কিন্তু এখনও রাজ্য রাজনীতিতে তুমুল প্রাসঙ্গিক নন্দীগ্রামের ভোটের ফলাফল বিতর্ক। পাঁচটির মধ্যে চার রাজ্যে ভোটে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে বিজেপি। চলছে লাড্ডু খাওয়ানোর পালা। এর মধ্যেই শনিবার নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর জয় নিয়ে বোমা ফাটিয়েছেন পদ্ম ছেড়ে জোড়াফুলে নাম লেখানো দুই নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও জয়প্রকাশ মজুমদার। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর দাবি, নন্দীগ্রামে হেরেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, সেকথা না কি বিরোধী দলনেতা নিজে তাঁকে বলেছিলেন।
তৃণণূল নেতাদের সাংবাদিক বৈঠকের ২৪ ঘন্টা না কাটতেই তার পাল্টা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। টুইটে তিনি লিখেছেন, "গতকালের তোলামুল দলের সাংবাদিক 'প্রহসন' থুড়ি সম্মেলন দেখে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত এর 'উত্তম ও অধম' কবিতাটি মনে পড়ে গেলো।" এই পোস্টেই গান্ধীজির তিনটি বাঁদরের ছবিও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
উল্লেখ্য, কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমল দফতরে শনিবার দুপুরে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়প্রকাশ মজুমদারের সঙ্গে ছিলেন দলের অন্যতম মুখ কুণাল ঘোষও।
দিন কয়েক আগে নজরুলমঞ্চে তৃণমূলের সাংগঠনিক বৈঠকেও নন্দীগ্রামের ফালাফল প্রসঙ্গ তুলেছিলেন
খোদ দলনেত্রী। অভিযোগ ছিল যে, তাঁকে হারাতে অ্যাডজাস্টমেন্ট করা হয়েছিল। তবে কারা এই অ্যাডজাস্টমেন্ট করেছিলেন সে সম্পর্কে সেদিন বিস্তারিত মুখ খোলেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, বিতর্ক উস্কোয় শনিবার রাজীব ও জয়প্রকাশের দাবি ঘিরে।
আরও পড়ুন- আসনসোলে মমতার তরুপের তাস ‘বিহারী বাবু’, ‘বহিরাগত’ খোঁচায় তৃণমূলকে নিশানা বিজেপির
শনিবার রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'ভোটের ফলের দিন আমাকে ফোন করে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, তিনি হেরে গিয়েছেন। কিন্তু পরে কী ভাবে তিনি জিতে যান, তা জানি না। কোন জাদুবলে তিনি জিতলেন সেটা তিনি নিজেই জানেন। নন্দীগ্রামে ভোটের ফের গণনা হোক, তাহলেই দুধ কা দুধ আর পানি কা পানি হয়ে যাবে।'
তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছিলেন, '২ মে বিকেল পাঁচটায় আমি হেস্টিংসের অফিসে বসে সাংবাদিক সম্মেলনে বলি মাননীয়া নন্দীগ্রামে জিতে গিয়েছেন। আমাদের প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু পরে জানতে পারলাম, অন্য ফল হয়েছে। শুভেন্দুকে আমি যখন বলি, তুমি তো হেরে গিয়েছিলে, আবার জিতলে কী ভাবে, জবাবে শুভেন্দু রহস্যময় হাসি হেসে বলে, ও অনেক কিছু করতে হয়েছে।'
আরও পড়ুন- Special: ত্রিপুরায় জোড়া-ফুলে অশনি সঙ্কেত, দলকে হুঁশিয়ারি বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসা বিধায়কের
উল্লেখ্য, কমিশনের ফলাফল অনুযায়ী নন্দীগ্রামে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট দু'হাজারের সামান্য কম ভোটে বিজেপিশুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হন তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই ভোটের গণনায় কারচুপির অভইযোগ তোলেন তিনি। বিধানসভায় পুনর্গণনার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্ট মামলা করেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন।