২ বছর পর ভুল বোঝাবুঝি ভেঙে পুরনো দলে ফিরলেন সব্যসাচী দত্ত। বিধানসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে তৃণমূলের পতাকা তুলে নেন সব্যসাচী। যেদিন বিধায়ক হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ গ্রহণ করলেন, সেদিনই তাঁর সঙ্গে দেখা করে তৃণমূলে ফেরেন সব্যসাচী। কিন্তু বিধানসভার ভিতরে এই দলবদল নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
তিনি এই বিধানসভার মধ্যে দল পরিবর্তনকে তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, নির্লজ্জ দলতন্ত্রের নজির তৈরি হল বিধানসভায়। আজ যা ঘটেছে তা বিধানসভার গরিমাকে কলঙ্কিত করেছে। পরিষদীয় মন্ত্রী হয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কীভাবে বিধানসভায় এভাবে দলবদল করালেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। বস্তুত, এদিন মমতার শপথ গ্রহণ কর্মসূচিতে বিধানসভায় গরহাজির ছিলেন বিজেপি বিধায়করা। তাই বিরোধীশূন্য বিধানসভায় শপথ গ্রহণ করেন মমতা।
এদিন সব্যসাচীও এসে পড়েন বিধানসভায়। প্রথমে মমতার সঙ্গে দেখা করেন। তারপর তাঁর অনুমতি নিয়েই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে ঢোকেন। সেখানে চলে ঘরওয়াপসি পর্ব। পার্থ ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের আরেক মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। দুজনের হাত থেকে দলীয় পতাকা তুলে নেন সব্যসাচী। যা দেখে টুইট করে তোপ দেগেছেন শুভেন্দু।
তিনি লিখেছেন, "শাসকদল বিধানসভাকে নিজেদের পার্টি অফিস মনে করছে। যা অত্যন্ত অদ্ভূত। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা আজ যে জিনিসের সাক্ষী থাকল তা দুর্লভ এবং নজিরবিহীন। ভারতের আর কোনও বিধানসভায় এমন ঘটনা হয়নি বা দেখেনি।"
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূলের বিপর্যয়ের পরই বেসুরো হন বিধানননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত। তারপর তাঁকে মেয়র পদ থেকে সরানো হয়। রাজনৈতিক গুরু মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। তখন তাঁর সল্টলেকের বাড়িতে মুকুল রায়ের লুচি-আলুর দম খেতে আসা আর তারপরেই দলবদল রাজ্য রাজনীতির শিরোনামে আসে। বিজেপিতে যোগ দিয়ে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থীও হন সব্যসাচী। তৃণমূলে যাঁর সঙ্গে আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক ছিল, সেই সুজিত বোসের বিরুদ্ধেই বিধাননগরে তাঁকে প্রার্থী করে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন মমতার শপথের দিনই অনুমতি নিয়ে তৃণমূলে ‘ঘরওয়াপসি’ সব্যসাচীর
কিন্তু নির্বাচনে হেরে যান সব্যসাচী। রাজ্যে বিজেপির শোচনীয় পরাজয়ের পর বহু তৃণমূল-ত্যাগী নেতা-নেত্রী বেসুরো হন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সব্যসাচীও। প্রকাশ্যে দলের শীর্ষ নেতাদের সমালোচনা করেন। ভোট রণকৌশল নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। কয়েক দিন তাঁকে তৃণমূলে ফেরানো হতে পারে বলে জল্পনা দানা বাঁধে। শোনা যায়, মন্ত্রী সুজিত বোসকে ফোন করে তাঁর আপত্তি আছে কি না জানতে চান দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সব্যসাচীকে দলে ফিরিয়ে নিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন