Advertisment

ভোট প্রস্তুতি ডান-বাম সব পক্ষের, দ্রুত সিদ্ধান্তে শুভেন্দু!

১৯ নভেম্বরে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে জনসভা করবেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। বৃহস্পতিবারের ওই জনসভার দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
শুভেন্দু অধিকারী।

শুভেন্দু অধিকারী।

প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি একেবারেই বন্ধ রেখেছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তবে অরাজনৈতিক কর্মসূচি যথারীতি অব্যাহত। দুর্গাপুজোর উদ্বোধন, বিজয়া সম্মেলনী, নন্দীগ্রাম দিবস, কালীপুজোর উদ্বোধনে হাজির থেকেই জনসংযোগ বজায় রেখেছেন শুভেন্দু। দলের সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক দূরত্ব নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। শুভেন্দুর বিজেপি যোগ, নতুন দল গঠন বা দল ছাড়া নিয়ে ব্যাপক জল্পনা ছড়িয়েছে। ১৯ নভেম্বরে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে জনসভা করবেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। বৃহস্পতিবারের ওই জনসভার দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। এখন প্রশ্ন কোন পথে শুভেন্দু? তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বই বা এক্ষেত্রে কী ভূমিকা নিচ্ছে?

Advertisment

দুদিন আগেও বিজেপি নেতৃত্ব শুভেন্দু প্রসঙ্গে এমন জবাব দিচ্ছিলেন তাতে মনে হতেই পারে তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়া সময়ের অপেক্ষামাত্র। তাঁর বিজেপি যোগ নিয়ে জল্পনা জিইয়ে রাখছিলেন বিজেপির ওই নেতারা। এখন শুভেন্দু প্রসঙ্গে ওই নেতাদের বক্তব্য বদলে গিয়েছে। কেউ বলছেন শুভেন্দু কী করবেন সেটা তাঁর বিষয়। মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন অবস্থান স্পষ্ট করলেই ভাল। কিন্তু আদৌ কী শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কোনও সম্ভাবনা আছে? বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে শুভেন্দুর বৈঠক নিয়ে বিস্তর গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। শুভেন্দু বা বিজেপি নেতৃত্ব কখনও বৈঠকের কথা স্বীকার করেননি। সারদা-নারদা তদন্ত নিয়েও নিন্দুকেরাও নানা কথা বলেছেন। এর আগে শুভেন্দু প্রকাশ্যে সারদা-কাণ্ডের জবাব দিয়েছেন। এদিকে চলতি মাসের শেষের দিকে বাংলায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের।

আরও পড়ুন কী করবেন শুভেন্দু? ‘মাথাব্যথা’ তৃণমূলের, অঙ্ক কষছে বিজেপি

নন্দীগ্রাম দিবসে শুভেন্দু বলেছেন, ১৩ বছর পর নন্দীগ্রামের কথা মনে পড়েছে। সিঁড়ি, লিফ্টের কথা উঠেছে। তাঁর পাল্টা জবাব দিচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। ইতিমধ্যে শুভেন্দুর ভূমিকা নিয়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ নাম না করে প্রকাশ্যে কড়া ভাষায় আক্রমন শানিয়েছেন। নন্দীগ্রামে গিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের গলায় শোনা গিয়েছে মীরজাফরের কথা। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারে তুই-তোকারি সম্বোধন করে তোপ দেগেছেন। কিন্তু মজার বিষয় কেউ কারও নাম নিচ্ছেন না। কেন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এভাবে আক্রমণ চলছে তা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন দলের এক বিধায়ক। তবে এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেস বা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে টু শব্দটিও করেনি শুভেন্দু অধিকারী। দলের একাংশ চাইছে দুপক্ষই বৈঠক করে বিষয়টি মিটিয়ে নিক। শীর্ষ নেতৃত্ব এ ব্যাপারে সক্রিয় হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে পরিস্থিতি যে যেদিকে গড়াচ্ছে সেক্ষেত্রে কতটা মিটমাট হবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে রাজনৈতিক মহল।

ইতিমধ্যে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর কাঁথিতে অধিকারী পরিবারের কাছে গিয়ে শিশির অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেছেন। শুভেন্দু তখন অন্য অনুষ্ঠানে বাইরে ছিলেন। পূর্ব ঘোষিত শুভেন্দুর কর্মসূচি সকলেই জানতেন। পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল সূত্রে খবর, ফিরহাদ হাকিম ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ মানতে পারছে না অধিকারী পরিবার। এর বিহিত চাইছেন তাঁরা। চাপের রাজনীতিতে এই ইস্যুটা অনেকটা বড় আকার ধারণ করেছে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। ক্রমশ দলের বিক্ষুব্ধ অংশ যোগাযোগ বাড়াচ্ছে শুভেন্দুর সঙ্গে। বিভিন্ন জেলায় শুভেন্দুর পোস্টার-ব্যানার বাড়ছে। দলের একটা অংশ মনে করছে, দলে শুভেন্দু যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না। তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।

আরও পড়ুন ‘কেউ আসেনি নন্দীগ্রামে’, ফের তোপ শুভেন্দুর

তবে অনুগামীদের একাংশের দৃঢ় বিশ্বাস 'দাদা' বিজেপিতে যোগ দেবেন না। সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশ শুভেন্দুর অনুগামী বা সমর্থক। তাঁরা বলছেন, আর যাই হোক দাদা বিজেপিতে যোগ দিতে পারবেন না। নতুন মঞ্চ গড়তে পারেন শুভেন্দু, এই চর্চাতেও মশগুল রাজনৈতিক মহল। সেক্ষেত্রে পূর্ব মেদিনীপুরের ঐতিহাসিক ঘটনার নামের যোগ থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ মনে করছে, বিজেপিতে গেলে যদিও বা রক্ষে তবে পৃথক দল করলে দলের ক্ষতি অনেকটাই বেশি হবে। অভিজ্ঞ মহল মনে করছে, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে ইতিমধ্যে বাংলার প্রতিপক্ষ সমস্ত রাজনৈতিক দলই ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোনও না কোনও সিদ্ধান্তে আসা জরুরি। অরাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে জনসংযোগ বজায় রাখলেও ভোটের লড়াই করতে গেলে রাজনৈতিক মঞ্চই প্রয়োজন। সকলের নজরে ১৯ নভেম্বরের জনসভা।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc Suvendu Adhikari
Advertisment